অর্ণব দাস, বারাকপুর: দলে ব্রাত্য ‘আদি’ বিজেপির সদস্যরা, অথচ তৃণমূল থেকে আসা অনেকেই খুব সহজে জায়গা করে নিচ্ছে, বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে তাঁদের। শনিবার বিজেপির তারকা নেতা মিঠুন চক্রবর্তীর সামনে এনিয়ে সরব হওয়ায় হেনস্তার শিকার হতে হল নোয়াপাড়ার বিজেপি কর্মী সুশীল সাহাকে। চব্বিশের লোকসভা ভোটে তিনি গারুলিয়া পুরসভার ২১ ওয়ার্ডের বুথে বিজেপির এজেন্ট ছিলেন। এবার মিঠুনের সামনে এ ধরনের অভিযোগ করে তাঁকে আরও কোণঠাসা করা হতে পারে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। যদিও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দলের গোষ্ঠী কোন্দলের কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন ‘মহাগুরু’। তাঁর মন্তব্য, “কর্মীদের বলেছি, একসঙ্গে লড়াই করতে হবে। যাঁদের মধ্যে বিভেদ আছে, আগামী বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত অন্তত তাঁরা বন্ধুত্ব করে নিক।”
মিঠুনের এহেন বার্তায় ফের অস্বস্তি বেড়েছে বারাকপুর শিল্পাঞ্চলের গেরুয়া শিবিরে। কটাক্ষ করে তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিক বলেছেন, “পাঁচ বছরে একবার মুখ দেখলে রাজনীতি বোঝা যায় না। মাটির গন্ধ পাওয়া যায় না। উনি প্রকৃত বাঙালি হলে ভিনরাজ্যে বাঙালিদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদ করতেন। উনি পদবিতে বাঙালি হলেও মানসিকতা বাঙালি নন। আসলে দীর্ঘদিন মুম্বইয়ের থাকার কারণে বাঙালিকে ছোট করার মানসিকতা পুরোটা ওঁর মধ্যে ঢুকে গিয়েছে।”
উল্লেখ্য, বারাকপুর শিল্পাঞ্চলে বিজেপি সাংগঠনিকভাবে দুর্বল। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয়ের পর থেকেই এমনটা দাবি করে আসছে তৃণমূল। এছাড়াও গত লোকসভা ভোটের আগে অর্জুন সিং ফের দল বদলে বিজেপিতে যাওয়ায়, এবং পরবর্তীতে তাঁর হেরে যাওয়ার পর থেকে সংঠনের তাঁর রাশ আলগা হয়েছে। সঙ্গে মাথাচাড়া দিয়েছে দলের গোষ্ঠী কোন্দল। এমন অবস্থায় এদিন বারাকপুর সদর বাজার এলাকার এক প্রেক্ষাগৃহে নোয়াপাড়া ও বারাকপুর বিধানসভার নেতা কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন মিঠুন চক্রবর্তী। ছিলেন বারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিং, সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি মহিলা মোর্চা সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্র-সহ অন্যান্য বিজেপি নেতা, কর্মীরা। পুরনো অথচ নিষ্ক্রিয় দলীয় কর্মীদের ফের ময়দানে নামাতেই ছিল এদিনের বৈঠক।