এটিএম লুট করে বিমানে বাগডোগরা থেকে দিল্লি! অভিযুক্তদের সকলেই হরিয়ানার বাসিন্দা, জানাল পুলিশ
আনন্দবাজার | ২৬ জুলাই ২০২৫
এটিএম লুট করে উড়ানে ভিন্রাজ্যে পাড়ি দুষ্কৃতীদের। শিলিগুড়িতে এটিএম লুটের ঘটনার তদন্তে নেমে এমনই জানাল পুলিশ। তদন্তকারীরা এ-ও জানাচ্ছেন, অভিযুক্তদের সকলেই হরিয়ানার বাসিন্দা। তিন জনকেই ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে শিলিগুড়ির ইস্টার্ন বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় থানা থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে এটিএম কিয়স্কে ঢুকে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা লুট করে পালায় একদল দুষ্কৃতী। এ নিয়ে শহর জুড়ে শোরগোল শুরু হয়েছে। নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। বস্তুত, একের পর এক এটিএম এবং গয়নার দোকানে ডাকাতি এবং লুটের ঘটনায় আতঙ্কিত শিলিগুড়ির বাসিন্দারা। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
এটিএম লুটের ঘটনার তদন্তে নেমে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট শনিবার জানিয়েছে, ওই ঘটনায় জড়িত মোট পাঁচ জন। পাঁচ জনই হরিয়ানার বাসিন্দা। ভিন্রাজ্য থেকে শিলিগুড়ি এসেছিল তারা। এটিএম লুটের পর ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় পালিয়ে গিয়েছে তারা। কেউ আকাশপথে ভিন্রাজ্যে চলে গিয়েছিল। কেউ কেউ অন্যত্র গা-ঢাকা দেয়। এ পর্যন্ত তিন জনকে পাকড়াও করা গিয়েছে। তাদের নাম উজেইর খান, আদিল খান এবং সাজিদ কালা।
ধৃত তিন জনকে জেরা করে জানা গিয়েছে, একটি কন্টেনার গাড়ি করে গ্যাসকাটার-সহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে শিলিগুড়ি পৌঁছেছিল তারা। সাজিদ ও আফতাব নামে দুই দুষ্কৃতী পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। প্রথমে তারা আশ্রয় নিয়েছিল ফুলবাড়ির একটি ধাবায়। সেই সময় ছক কষা হয়, কোন রাস্তা ধরে লুটের পর পালানো হবে। এটিএম লুটের জন্য প্রথমে একটি বাইক চুরি করে দুষ্কৃতীরা। সেই বাইকে অম্বিকানগরে পৌঁছোয়। সেখানে একটি চারচাকা গাড়ি চুরি করে। এটিএম লুটের পরে মাটিগাড়ার কাছে গাড়িটি ফেলে কন্টেনারে রাজ্য ছাড়ে তিন জন। তবে সাজিদ ও আদিল লুটের পর চলে যায় বাগডোগরা বিমানবন্দরে। সেখান থেকে উড়ান ধরে দু’জন চলে যায় দিল্লি। বিভিন্ন সূত্র মারফত খবরের ভিত্তিতে, সিসিটিভি ফুটেজ এবং টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে পুলিশের একটি দল দিল্লি যায়। সেখান থেকে সাজিদ ও আদিল, দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। ট্রানজিট রিমান্ডে ধৃতদের শিলিগুড়ি নিয়ে আসা হবে। অন্য দিকে, উজেইর নামে আর এক অভিযুক্তকে বিহারের সুফল জেলা থেকে কন্টেনার-সহ পাকড়াও করে পুলিশ। সাজিদ ও আফতাব এখনও অধরা।
শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (পূর্ব) রাকেশ সিংহ বলেন, ‘‘পুলিশ তৎপরতার সঙ্গে এই মামলার সমাধান করেছে। অভিযুক্তদের প্রত্যেকেই হরিয়ানার বাসিন্দা। গোটা ভারতে এরা এটিএম লুটের সঙ্গে জড়িত। পঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত, মহারাষ্ট্র যেমন রয়েছে তেমনই, পশ্চিমবঙ্গের ডানকুনি, শিলিগুড়িতেও এটিএম লুটের ঘটনায় এরা জড়িত। লুটের পর বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ত দলটি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষেরও আরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন। আমরা ৯ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা উদ্ধার করতে পেরেছি।’’