• নবান্ন অভিযান নির্ধারিত দিনেই হবে, হঁশিয়ারি সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের
    আনন্দবাজার | ২৬ জুলাই ২০২৫
  • সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ আগামী ২৮ জুলাই (সোমবার) নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে। সেই মিছিল নিয়ে গত শুক্রবার কড়া নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। উচ্চ আদালতের সেই নির্দেশের পরে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চকে নবান্ন অভিযানের অনুমতি দেয় না হাওড়া সিটি পুলিশও। এর পর সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের রাজ্য আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষের হঁশিয়ারি, “নবান্ন অভিযান হবেই, নির্ধারিত দিনেই হবে।”

    ভাস্করের অভিযোগ, নবান্ন অভিযানের রুট ম্যাপ নিয়ে রাজ্য সরকার ও পুলিশ যৌথভাবে হাই কোর্টকে বিভ্রান্ত করেছে। তিনি বলেন, “আন্দোলনের যে রুট ম্যাপ আমরা জমা দিয়েছিলাম, তা নিয়ে সচেতনভাবে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে আদালতে। এই ভাবে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে আটকানোর চেষ্টা চলছে।” তিনি আরও বলেন, “নবান্ন অভিযান কোনওভাবেই ঠেকানো যাবে না। নির্ধারিত দিনেই লক্ষ্যের দিকে এগোবে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ-সহ আরও বিভিন্ন সংগঠনের মিছিল।”

    প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চলতি মাসের ২৮ এবং ২৯ তারিখ বীরভূম জেলা সফরে যাবেন। এই প্রসঙ্গে ভাস্কর বলেন, “আমাদের মিছিল আটকালে সেখানে বসেই অবস্থান বিক্ষোভ চলবে। যত ক্ষণ না পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী আমাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন তত ক্ষণ পর্যন্ত আমাদের বিক্ষোভ অব্যাহত থাকবে। আমরা অপেক্ষা করব অবস্থান-বিক্ষোভ থেকে।” সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের দাবি, গণতান্ত্রিক অধিকারের উপর হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে প্রশাসন। কিন্তু তারা জানিয়ে দিয়েছে, প্রশাসনের যে কোনও বাধার মুখোমুখি হয়েই তারা তাদের কর্মসূচি পালন করবে। দুর্গাপুর থেকেই ভাস্কর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “এটা শুধু একটা কর্মসূচি নয়, এটা জনস্বার্থের লড়াই। এর সঙ্গে আপস নয়।”

    প্রসঙ্গত, বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়ে গত ১২ জুলাই পুলিশকে চিঠি দিয়েছিল। শনিবার কমিশনার প্রবীণকুমার ত্রিপাঠী জানান, সব দিক বিবেচনা করে তাঁরা নবান্ন অভিযানের অনুমতি দেননি। পাশাপাশি, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়ার পরেই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মঙ্গলাহাটের ব্যবসায়ীরা। তাঁদের বক্তব্য ছিল, সপ্তাহে সোম এবং মঙ্গলবার হাট বসে। আর ওই দুই দিনেই বার বার নবান্ন অভিযান হচ্ছে। এতে তাঁদের ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। সেই মামলায় হাই কোর্ট জানিয়ে দেয়, হাটের দিনে জমায়েত-মিছিল করা যাবে না মঙ্গলাহাটের এলাকায়। নির্দেশের অন্যথা হলে পুলিশকেও কড়া পদক্ষেপ করতে বলেছেন বিচারপতি। তার পরেই পুলিশ জানিয়ে দেয়, ২৮ জুলাই নবান্ন অভিযান তারা করতে দেবে না।

    তার পরেও অভিযান হলে কী করা হবে, তা-ও জানিয়ে দিয়েছেন কমিশনার। তিনি বলেন, ‘‘আন্দোলনকারীরা যাতে কোনও ভাবে মিছিল করে নবান্নের দিকে এগোতে না পারেন, তার জন্য শুরু হয়েছে লোহার ব্যারিকেড তৈরির কাজ। লোহার বিম ঢালাই করে ফোরশোর রোডে রামকৃষ্ণপুর ঘাট মোড়ে বসানো হচ্ছে। এ ছাড়াও রাস্তা ড্রিল মেশিন দিয়ে গর্ত করে গজাল দিয়ে ব্যারিকেড মজবুত করে বসানো হবে।’’

    মঙ্গলাহাট ব্যবসায়ী সমিতি (সেন্ট্রাল)-এর সাধারণ সম্পাদক রাজকুমার সাহা বলেন, ‘‘পর পর দু’সপ্তাহ হাটের দিন নবান্ন অভিযানের জন্য আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এ বার প্রশাসনের পক্ষ থেকে দোকানপাট বন্ধ রাখতে বলা হয়। তখন বাধ্য হয়ে আমরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হই। বিচারপতি নির্দেশ দেন, হাট চত্বরে কোনও জমায়েত করা যাবে না। সে ক্ষেত্রে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। এই রায়ে আমরা খুশি।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)