• টিএমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবসে কেন পরীক্ষা? মুখ খুললেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য: কোনও দলের অনুষ্ঠানকেই গুরুত্ব দেব না
    আনন্দবাজার | ২৬ জুলাই ২০২৫
  • তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্রশাখা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর প্রতিষ্ঠা দিবসে কেন পরীক্ষা ফেলা হয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে, তা নিয়ে বিতর্কের মাঝে এ বার মুখ খুললেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শান্তা দত্ত দে। তাঁর স্পষ্ট দাবি, শুধু তৃণমূল বলে নয়, কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিকেই তিনি গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাই পরীক্ষাসূচি যেমন স্থির হয়েছে, তেমন ভাবেই পরীক্ষা নেওয়া হবে ওই দিনও।

    আগামী ২৮ অগস্ট টিএমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবস। ঘটনাচক্রে ওই দিনেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের স্নাতক স্তরে (বিকম) এবং আইন বিভাগের স্নাতক স্তরে (বিএ এলএলবি) চতুর্থ সেমেস্টারের পরীক্ষা রয়েছে। পরীক্ষা চলবে দুপুর ২টো থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। দলীয় কর্মসূচির দিনে কেন পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূলের ছাত্রশাখা। টিএমসিপির রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য এটিকে একটি ‘গভীর ষড়যন্ত্র’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন। এটিকে কোনও সাধারণ ‘অ্যাকাডেমিক সিদ্ধান্ত’ হিসাবে দেখতে নারাজ তৃণমূলের ছাত্র নেতা। তাঁর দাবি, ‘‘এটি হল ছাত্রছাত্রীদের গণতান্ত্রিক অধিকারে বাধা দেওয়া এবং দিল্লির ইশারায় চলা এক রাজনৈতিক অপকৌশল।’’

    রাজ্যের শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের এই অভিযোগ নিয়ে শনিবার প্রশ্ন করা হয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শান্তাকে। যদিও টিএমসিপির অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং অযৌক্তিক বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। উপাচার্যের বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার দিনক্ষণ স্থির করে ‘বোর্ড অফ স্টাডিজ়’। বর্তমানে যে পরীক্ষাসূচি নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে, সেটিও প্রায় তিন মাস আগে বৈঠক করে স্থির করেছে ‘বোর্ড অফ স্টাডিজ়’। শিক্ষাবর্ষের ক্যালে়ন্ডারের ভিত্তিতে এই পরীক্ষাসূচি স্থির করা হয়। সে ক্ষেত্রে সরকারি ছুটির দিনগুলিকে বাদ দিয়েই যে পরীক্ষার নির্ঘণ্ট তৈরি হয়, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন শান্তা।

    শান্তার কথায়, “যদি কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠা দিবস মানতে হয়, তবে যতগুলি রাজনৈতিক দলের (ছাত্র) সংগঠন আছে, সকলের প্রতিষ্ঠা দিবস আমাকে মানতে হয়। তা হলে কি পরীক্ষা ব্যবস্থা চালানো সম্ভব? আজ তৃণমূল মনে করছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তেমনই সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই তা বলতে পারে। এআইডিএসও-ও তা বলতে পারে। আবার বিজেপির ছাত্র সংগঠনও সেটি বলতে পারে। তা হলে আমরা দাঁড়াব কোথায়?” কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আরও বলেন, “কোনও রাজনৈতিক দলের কোনও অনুষ্ঠানের দিনকে গুরুত্ব দিতে আমি রাজি নই। তাই পরীক্ষা যেমন ভাবে তিন মাস আগে স্থির হয়েছে, তেমন ভাবেই পরীক্ষা হবে। সরকারি ছুটির দিনে যাতে পরীক্ষা না পরে সেটি দেখা হয়েছে। আর তো কিছু আমাদের মাথায় রাখার কথা না।”

    তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবস বিতর্কে শান্তার দাবি, তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের পৃষ্ঠপোষকতা করেন না। তাই তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম, এসইউসিআই-সহ সব রাজনৈতিক দলই তাঁর কাছে সমান ব্যবহার পাবে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)