• ডিসেম্বরেই গঙ্গা ভাঙন ঠেকাতে কাজ শুরুর সিদ্ধান্ত ফ্লাড কন্ট্রোল কমিশনের
    বর্তমান | ২৭ জুলাই ২০২৫
  • প্রীতেশ বসু  কলকাতা

    গঙ্গার ভাঙন রোধে কাজ শুরুর সময়সীমা বেঁধে দিল ‘গঙ্গা ফ্লাড কন্ট্রোল কমিশন’। আগামী ডিসেম্বরে কাজ শুরু করতে হবে। সেই মতো ডিপিআর তৈরি থেকে শুরু করে যাবতীয় পরিকল্পনা এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ভাঙন রোধ নিয়ে বিহার, ঝাড়খন্ড এবং পশ্চিমবঙ্গর সঙ্গে সমন্বয় বৈঠকের পর এই কথা জানিয়ে দিয়েছে কমিশন।  ভাঙন রোধের প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে এই তিন রাজ্যের সমন্বয় বৈঠক জরুরি ছিল। বৈঠক ডাকার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্রমাগত চাপ বাড়াচ্ছিলেন। তাই দ্রুততার সঙ্গে বৈঠক আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছিল জলশক্তি মন্ত্রক। গত ২৪ জুলাই পাটনায় তিন রাজ্যের প্রতিনিধিদের নিয়ে সেই বৈঠক হয়। পশ্চিমবঙ্গের তরফে যোগ দিয়েছিলেন সেচদপ্তরের পদস্থ কর্তারা। 

    গঙ্গা ভাঙন ঠেকাতে পশ্চিমবঙ্গে ১৬৩.৫ কিলোমিটার নদীপাড়ে পরিকাঠামো তৈরি এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিহারে এই কাজ হবে ১৫ কিলোমিটার নদীপাড়ে। জলশক্তি মন্ত্রকের কেন্দ্রীয় কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী এই ১৫ কিলোমিটার অংশে কাজের জন্য ডিপিআর তৈরি চলছে বলে জানিয়েছেন বিহারের প্রতিনিধিরা। পশ্চিমবঙ্গের অংশে যে মডেলে কাজ হবে, সেই পদ্ধতি এবং সংস্থার সাহায্য নিয়েই বিহারে কাজ হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। ডিপিআর তৈরির কাজ  ৪৫ দিনের মধ্যে শেষ হবে। বাকি প্রস্তুতির কাজ দ্রুত শেষ করে চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকেই কাজ চালুর পরামর্শ দিয়েছে কমিশন। সেই সঙ্গে মালদহের রতুয়ায় যে কাজ হবে, তার ডিপিআর তৈরি করে আগামী সাত দিনের মধ্যে জমা দিতে হবে কমিশনের কাছে। 

    আন্তঃরাজ্য সীমানায় সাকরিগালি চ্যানেলে ১৫ কিলোমিটার ড্রেজিংয়ের জন্য পশ্চিমবঙ্গকে দ্রুত এনওসি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিহার এবং ঝাড়খণ্ডকে। পার্শ্ববর্তী রাজ্যে এই কাজের খরচও বহন করতে হবে পশ্চিমবঙ্গকে। কারণ, পশ্চিমবঙ্গের অংশে ভাঙন রোধের জন্য এই ১৫ কিলোমিটার অংশে পরিকাঠামো গড়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ। তাই বিহার ও ঝাড়খণ্ডকে এক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গকে সবরকম সহযোগিতার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। ফ্লাড কন্ট্রোল কমিশনের পরবর্তী বৈঠক হবে ৪৫ দিন পরে। এই সময়ের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের অংশে কাজের ডিপিআর খতিয়ে দেখে বাকি দুই রাজ্যকে তা পাঠিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে কমিশনের। 

    প্রসঙ্গত, গঙ্গার ভাঙন সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য কেন্দ্রের উপর ক্রমাগত চাপ বাড়িয়ে গিয়েছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া সহ দপ্তরের আধিকারিকরা বারবার জলশক্তি মন্ত্রককে এনিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে গিয়েছেন। শেষমেশ জুন মাসের মাঝামাঝি কমিশনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল নয়াদিল্লি। তারপরই ২৪ জুলাই তিন রাজ্যকে নিয়ে সমন্বয় বৈঠক করে কমিশন। 
  • Link to this news (বর্তমান)