• নিম্নচাপ সরলেও রাজ্যে সক্রিয় মৌসুমি বায়ু, আগামী কয়েকদিন চলবে হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি
    বর্তমান | ২৭ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গভীর নিম্নচাপ দক্ষিণবঙ্গের উপর থাকায় শুক্রবার দিনভর ব্যাপক পরিমাণে বৃষ্টি হয়েছে এই অঞ্চলে। এরপরই নিম্নচাপটি দ্রুত সরে গিয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, শনিবার সকালে সেটি ছত্তিশগড় ও লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের উপর অবস্থান করছিল।  এরপর পশ্চিম অভিমুখে গিয়ে পূর্ব মধ্যপ্রদেশের দিকে সরে যাওয়ার পথে দুর্বল হয়ে পড়বে। তবে নিম্নচাপ সরে গেলেও আগামী কয়েকদিন দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টি চলবে। সাধারণভাবে হাল্কা থেকে মাঝারি মাত্রায় বৃষ্টি হবে। কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। উত্তরবঙ্গে আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলার কোথাও কোথাও আজ, রবিবার অতি ভারী বৃষ্টির ‘কমলা সতর্কতা’ জারি করা হয়েছে। সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর জন্যই বৃষ্টিপাত চলবে। রাজস্থান থেকে বিস্তৃত মৌসুমি অক্ষরেখা শনিবার দক্ষিণবঙ্গের উপর দিয়ে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। তাই এদিনও কলকাতা সহ দক্ষিণ ও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় সারাদিন দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে। তবে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির মাত্রা শুক্রবারের তুলনায় কমেছে। রবিবার পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশা উপকূলের মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। 

    আগামী কয়েকদিন দক্ষিণবঙ্গের দুই বর্ধমান, দুই ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, বীরভূম, হুগলি ও বাঁকুড়া জেলার কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। দার্জিলিং, কালিম্পং, কোচবিহার, মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়ও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। আগামী সপ্তাহে উত্তর বঙ্গোপসাগরে ফের একটি নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।

    গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই ভালোরকম বৃষ্টিপাত হয়েছে। উপকূল সংলগ্ন এলাকায় বৃষ্টির মাত্রা ছিল আরও বেশি। শনিবার সকাল সাড়ে ৮ টা পর্যন্ত গত ৪৮ ঘণ্টায় কলকাতায় (আলিপুরে) প্রায় ১৪২ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া, দমদমে ১৩৯ মিমি, সল্টলেকে ১৯৫ মিমি, উলুবেড়িয়ায় ১৩৬ মিমি, ক্যানিংয়ে ১০৮ মিমি, মেদিনীপুরে ৯৮ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে।  

    ১ জুন  থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে একমাত্র পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বৃষ্টির ঘাটতি আছে। স্বাভাবিকের থেকে ২৬ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে এখানে। কোথাও স্বাভাবিকের থেকে ১৯ শতাংশ কম বৃষ্টি হলে তা ‘ঘাটতি’ হিসেবে ধরা হয়। এই নিরিখে মালদহ ও কালিম্পং ছাড়া উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই এবার বর্ষাকালে বৃষ্টির ঘাটতি চলছে। দক্ষিণবঙ্গে সব থেকে বেশি বৃষ্টি (৮৯০.৬ মিমি) হয়েছে বাঁকুড়া জেলায়। তারপর রয়েছে পুরুলিয়া (৮২২.৬ মিমি)।  দুই জেলাতেই স্বাভাবিকের থেকে ৭৫ শতাংশের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। একের পর এক নিম্নচাপের গতিপ্রকৃতির জন্যই পশ্চিমাঞ্চলে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। সামগ্রিকভাবে গোটা রাজ্যে বর্ষাকালে স্বাভাবিকের থেকে ১ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)