অনলাইন মুদি সামগ্রীর ওয়েবসাইটের আড়ালে ব্যাঙ্কের তথ্য হাতানোর চক্র
বর্তমান | ২৭ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: পাণ্ডুয়া থেকে অনলাইন প্রতারণা চক্রের এক পান্ডাকে গ্রেপ্তার করল হুগলি গ্রামীণ জেলার পুলিস। একটি পরিচিত ই-কমার্স সাইটের মুদিখানা সামগ্রী সরবরাহের জাল ওয়েবসাইট তৈরি করে ব্যাঙ্কের তথ্য হাতিয়ে নিত ওই চক্র। পুলিসের দাবি, দেশের একাধিক রাজ্যে প্রতারণার জাল বিছিয়েছিল চক্রটি। সম্প্রতি সেই চক্রের এক পান্ডাকে হুগলির পাণ্ডুয়ার একটি বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতের নাম মহম্মদ আফসার। বছর চব্বিশের ওই যুবক স্থানীয় শেখপুকুরের বাসিন্দা। ইতিমধ্যেই তাকে আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিস।
কীভাবে প্রতারণা করত ওই চক্র? চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে তদন্তে। জানা গিয়েছে, ওই জনপ্রিয় অনলাইন মুদিখানার একটি জাল ওয়েবসাইট তৈরি করে সামাজিক মাধ্যমে তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। আগ্রহীরা চাল, ডাল, মাছ, মাংস কিনতে গেলেই দুষ্কৃতীদের কাছে তথ্য চলে যেত। মজার কথা, ওই ওয়েবসাইটে নগদ টাকায় কেনাকাটা করা যেত না। যাঁরা ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডে জিনিস কিনতে যেতেন, তাঁদের সুযোগ দেওয়া হতো। কারণ, ওই পদ্ধতিতে কার্ডের যাবতীয় তথ্য দুষ্কৃতীরা পেয়ে যেত। পরে ফোন করে একটি বিশেষ ফাইল ডাউনলোডের পরামর্শ দেওয়া হতো। তাতেই গ্রাহকের অ্যাকাউন্টের দখল চলে যেত সাইবার প্রতারকদের কাছে। যাঁরা নগদে কেনাকাটা করতে চাইতেন দুষ্কৃতীরা তাঁদেরও ফোন করে কার্ডে লেনদেনের পরামর্শ দিত।
পুলিস জানিয়েছে, স্থানীয় একটি সূত্র থেকে প্রথমে এক সন্দেহজনক বাসিন্দার সম্পর্কে তথ্য মেলে। তার ভিত্তিতে দিনকয়েক আগে পাণ্ডুয়ায় অভিযান চালিয়ে আফসারকে পাকড়াও করা হয়। ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ২৩টি সিমকার্ড, একগুচ্ছ মোবাইল ফোন ও লক্ষাধিক টাকা। পুলিস জানিয়েছে, ইতিমধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা প্রতারণার হদিশ মিলেছে। এরাজ্যের একাধিক জেলাতেও অপরাধীরা প্রতারণা করেছে। সেই সমস্ত তথ্য একত্র করা হচ্ছে। গ্রামীণ পুলিসের এক শীর্ষকর্তা বলেন, প্রতারণার টাকা দিয়ে মূলত অনলাইনে ফোন ও গিফট কার্ড কিনত প্রতারকরা। সেসব জিনিস ভিন্ন ভিন্ন ঠিকানায় ডেলিভারি করা হতো। ওই চক্রের বাকি সদস্য, সে সংস্থার মাধ্যমে জাল ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে, তাদের খোঁজ চলছে।