• মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ, ধৃত বাবাকে সামনে পেয়ে তুমুল বিক্ষোভ স্থানীয়দের, বাঁশদ্রোণী কাণ্ডের পুনর্নির্মাণে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি, ইটের আঘাতে জখম ৬
    বর্তমান | ২৭ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: চার বছর ধরে কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণে অভিযুক্ত বাবা। সপ্তাহখানেক আগে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছিল। ধৃতকে ঘটনা পুনর্নির্মাণের জন্য শনিবার বাঁশদ্রোণীর পীরপুকুরের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযুক্তকে দেখামাত্র অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে এলাকার পরিস্থিতি। তাকে লক্ষ্য করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয়রা। ক্রমে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। বেশ কিছুক্ষণ ধরে চলে ইটবৃষ্টি। জখম হন দু’জন পুলিস কর্মী সহ মোট ছ’জন। এই ঘটনায় দু’জনকে আটক করেছে বাঁশদ্রোণী থানার পুলিস। 

    অভিযোগ, ১৩ বছরের মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করেছে বাবা। পুলিসের কাছে নির্যাতিতার দাবি, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে সে। লোকলজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু বলতে পারেনি। শেষমেশ কয়েকজন বন্ধুর পরামর্শে ১৮ জুলাই বাঁশদ্রোণী থানায় বাবার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে কিশোরী। তার ভিত্তিতে তদন্তে নেমে অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেপ্তার করেন তদন্তকারীরা। আদালতে পেশ করা হলে বিচারক অভিযুক্তকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি ও ঘটনা পুনর্নির্মাণের আর্জি মঞ্জুর করেন বিচারক। 

    স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন দুপুরে পীরপুকুরে অভিযুক্তকে তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিসের গাড়ি ও অভিযুক্তকে দেখেই স্থানীয় মানুষ পথ অবরোধ করেন। একইসঙ্গে, নির্যাতিতার মা তথা অভিযুক্তের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করার জন্য দাবি জানায় এলাকাবাসী। সুস্মিতা মণ্ডল নামে স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘ওর মা সব জানতেন। বাবা যদি দোষী হয়ে থাকে, তাহলে ওর মা’ও সমান দোষী। মেয়ের সঙ্গে বাবা যে দীর্ঘদিন ধরে কুকর্ম করছে, মা সবটাই জানেন। তাও পুলিসের কাছে যাননি। ওঁকেও গ্রেপ্তার করুক পুলিস।’ 

    পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে অভিযুক্তকে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে দ্রুত সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে পুলিস। তখন আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযুক্তকে লক্ষ্য করে আশপাশের বাড়ির ছাদ থেকে ইটের টুকরো ছুড়তে থাকেন স্থানীয়রা। 

    প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, এই ঘটনায় দু’জন পুলিসকর্মী জখম হন। তবে সরকারিভাবে পুলিস কর্মী জখমের বিষয়টি অস্বীকার করেছে লালবাজার। এছাড়াও চারজন স্থানীয় বাসিন্দা জখম হয়েছেন। এরপর পুলিস দ্রুত অভিযুক্তকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়। এরপর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। স্থানীয় মহিলারা টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান। এলাকা শান্ত করতে সাউথ সাবার্বান ডিভিশনের বিরাট পুলিস বাহিনী যায়। তাঁরা উত্তেজিত মানুষকে বোঝালে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। ইট বৃষ্টির অভিযোগে পুলিস দু’জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিস।
  • Link to this news (বর্তমান)