• নথিভুক্ত হবে পরিযায়ীদের ভোটার-নম্বর
    আনন্দবাজার | ২৭ জুলাই ২০২৫
  • পরিযায়ী শ্রমিকদের ভোটার কার্ড নম্বর সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। এই মর্মে সংশ্লিষ্টদের কাছে বার্তা পৌঁছনোর কাজও শুরু হয়েছে। এ রাজ্যে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনের কাজ শুরু হওয়ার আগে এই পদক্ষেপ তাৎপর্যপূর্ণ। প্রসঙ্গত, গত ২১ জুলাইয়ের সভামঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দেন যে ভোটার তালিকা থেকে চক্রান্ত করে নাম বাদ দেওয়া তিনি মেনে নেবেন না।

    কোভিডের পর থেকে সরকারি স্তরে পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল রাজ্য সরকার। প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, বিপুল সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিক ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট পোর্টালে নাম নথিবদ্ধ করেছেন। এ বার নথিভুক্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের উদ্দেশে শ্রম দফতরের বার্তা—সরকারের কাছে তাঁরা যেন নিজেদের সচিত্র ভোটার কার্ডের (এপিক) নম্বর নথিবদ্ধ করেন। সঙ্গে সম্পর্কিত আরও কিছু তথ্য তাঁরা যাতে সরকারের কাছে দাখিল করেন, সেই বার্তাও দেওয়া হয়েছে।

    সব ঠিক থাকলে আগামী মাস থেকে এ রাজ্যে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনের কাজ শুরু হতে পারে। এই কাজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা চালাবেন জাতীয় নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিরা। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকেরা বছরের বেশিরভাগ সময়েই রাজ্যের বাইরে কার্যসূত্রে বসবাস করেন। ফলে সমীক্ষার সময়ে তাঁরা নিজেদের প্রকৃত ঠিকানায় না থাকলে নাম বাদ পড়তে পারে। যার ইঙ্গিত বিহারে পাওয়া গিয়েছে। যদিও কমিশনের বক্তব্য, নতুন নাম তোলা বা অন্য রাজ্য থেকে ঠিকানা বদলের ক্ষেত্রে আবেদনকারীকে নির্দিষ্ট বয়ানে জানাতে হবে, তাঁর নাম রয়েছে একটি কেন্দ্রেই। দু’টি কেন্দ্রে নাম থাকলে একটি কেন্দ্রের নাম বাদ যাবে।

    এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের শাসক দল এবং রাজ্য সরকারের একাংশ মনে করছে, এই বিধির সুযোগ নিয়ে যোগ্যদের নামও বাদ দেওয়া হতে পারে। যেহেতু পরিযায়ী শ্রমিকদের সংখ্যা মোটেই কম নয়, তাই তাঁদের নিয়ে প্রশাসনের আশঙ্কা তুলনায় বেশি। সরকারি ভাবে জানানো হয়, এ রাজ্যের ২২ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক অন্য কোনও না কোনও রাজ্যে কর্মসূত্রে থাকেন। যদিও প্রশাসনের অন্য অংশের মতে, মোট যত জন পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন, তাঁরা সকলে এখনও নথিবদ্ধ হননি সরকারের খাতায়। ফলে মোট সংখ্যা অন্তত ৫০ লক্ষ। তবে প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, সংখ্যা যা-ই হোক না কেন, ভোটের আগে এই অংশের ভোটারদের এক জনের নামও বাদ যাক, তা চাইছে না শাসক দল তৃণমূল। সেই কারণে নথিভুক্ত প্রত্যেকের ভোটার কার্ডের নম্বর চাওয়া হচ্ছে। নিবিড় সংশোধনী প্রক্রিয়ার ফলাফল প্রকাশের পরে সেই নম্বরগুলি নতুন তালিকায় রয়েছে কি না, তা মিলিয়ে দেখা হতে পারে। নম্বর খুঁজে না পেলে কমিশনের বিরুদ্ধে সরব হতে পারে দল।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)