• অ্যাপ-ক্যাব, বাইক-ট্যাক্সির ভাড়া কি বাড়ছে পুজোর আগেই?
    আনন্দবাজার | ২৭ জুলাই ২০২৫
  • বার বার শিবির করেও মেলেনি পর্যাপ্ত সাড়া। আটকানো যায়নি ব্যক্তিগত নম্বর প্লেট লাগানো গাড়ি বা মোটরবাইক নিয়ে বাণিজ্যিক কাজ। এই পরিস্থিতিতে, বিশেষ করে অ্যাপ-নির্ভর সংস্থায় এমন ব্যক্তিগত নম্বর প্লেট লাগানো গাড়ি বা বাইক যাতে যাত্রী-পরিষেবা না দেয়, তা নিশ্চিত করতে কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে সরকার। সূত্রের খবর, এমন গাড়ি বা বাইকের প্রতিটি ‘রাইড’-এর (এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় যাত্রীকে পৌঁছে দেওয়ার বরাত) মোট ভাড়ার উপরে ছয় শতাংশ বাড়তি কর হিসাবে নিতে চলেছে সরকার। পুজোর আগেই এই পদক্ষেপ করা হবে বলে খবর। তাতেই অনেকে মনে করছেন, এই বাড়তি টাকার বোঝাও চাপবে সেই সাধারণ মানুষের উপরেই। ফলে, সব মিলিয়ে অ্যাপ-ক্যাব এবং বাইক-ট্যাক্সিতে চড়ার খরচ বাড়বে। যদিও রাজ্য প্রশাসনের তরফে এ ব্যাপারে এখনও স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। রাজ্য পরিবহণ দফতরের এক কর্তার মন্তব্য, ‘‘বেআইনি কাজ আটকাতে এই পথই ভরসা। সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। শুধু ঘোষণার অপেক্ষা।’’

    হলুদ রঙের বাণিজ্যিক নম্বর প্লেটবিহীন গাড়ি বা মোটরবাইক চালিয়ে যাত্রী-পরিষেবার ব্যবসা করলে সরকারের তা থেকে আয় হয় না। এ নিয়ে একাধিক পদক্ষেপ করার পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি। সরকারি উদ্যোগে, বিশেষ করে, বাইক-ট্যাক্সির জন্য হলুদ নম্বর প্লেট করে দেওয়ার শিবির দফায় দফায় করা হলেও তেমন সাড়া মেলেনি। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এই মুহূর্তে শহরে এমন বাইক-ট্যাক্সির সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। কিন্তু সরকারি শিবিরে গিয়ে বাণিজ্যিক নম্বর প্লেট করানো হয়েছে মাত্র সাড়ে তিন হাজার মোটরবাইকের। শনিবারই কসবা আরটিও-তে এমনই একটি শিবির হয়েছে। গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট, পাঁচ বছরের জন্য কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী পাঁচটি জেলা মিলিয়ে পারমিটের খরচ ও হলুদ নম্বর প্লেট লাগানোর খরচ-সহ বেশ কয়েকটি ধাপে কমবেশি ২৬০০ টাকা দিলেই বাণিজ্যিক নম্বর প্লেট করানো যাবে বলে সরকার থেকে প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু তার পরেও দিনের শেষে সেখানে মাত্র ৫০টি মোটরবাইকের জন্য হলুদ নম্বর প্লেটের আবেদন করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

    এর মধ্যেই চলতি মাসের শুরুতে ‘মোটর ভেহিক্‌ল এগ্রিগেটর গাইডলাইন, ২০২৫’ প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাতে এমন বেআইনি গাড়ির বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার চাইলে পদক্ষেপ করতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অ্যাপ-নির্ভর সংস্থাগুলি এমন গাড়ি বা মোটরবাইক চালকদের ভাড়া পেতে সাহায্য করলে ভাড়া-পিছু টাকা রাজ্য সরকার দাবি করতে পারে বলেও জানানো হয়েছে গাইডলাইনে। এর পরেই রাজ্য সরকারের তরফে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এমন গাড়ি বা বাইকের ক্ষেত্রে মোট ভাড়ার ছয় শতাংশ করে নিতে চলেছে সরকার।

    ‘কলকাতা সাবার্বান বাইক-ট্যাক্সি অপারেটর্স ইউনিয়ন’-এর সভাপতি শান্তি ঘোষ যদিও বললেন, ‘‘আমরা বাণিজ্যিক নম্বর প্লেট লাগানো গাড়ি নিয়েই কাজ করানোর পক্ষে। কিন্তু কিছু অসাধু লোককে শায়েস্তা করতে গিয়ে সরকার যদি এই টাকা নেয়, সেটা সাধারণ মানুষের উপরেই চাপবে। ধর্মতলা থেকে পার্ক স্ট্রিট যেতে যে ভাড়া গুনতে হত, সেই ভাড়ার উপরে আরও ছয় শতাংশ বাড়তি ভাড়া যোগ হবে। ভুগবেন সেই সাধারণ মানুষই।’’ বাড়তি ভাড়ার বোঝা কি মানুষের উপরেই চাপবে? রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী অবশ্য সব শুনে বলেন, ‘‘এখনও ভাবনাচিন্তা চলছে। ঘোষণা করার মতো পর্যায়ে আসেনি।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)