• পেন নিয়ে কাড়াকাড়ির সময় চোখে খোঁচা! দৃষ্টিশক্তি হারানোর পথে স্কুল ছাত্রী
    প্রতিদিন | ২৭ জুলাই ২০২৫
  • মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: স্কুলের মধ্যে দুই সহপাঠীর মধ্যে পেন নিয়ে কাড়াকাড়ির সময় চোখে খোঁচা! জখম হল এক ছাত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে বাগনানের বাঁটুল মহাকালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পেনের খোঁচায় ছাত্রীর চোখের মণি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর। পরবর্তীতে কলকাতার মেডিক্যাল কলেজে মেয়েটির চোখে অস্ত্রোপচারও হয়। বর্তমানে সে বাড়িতেই চিকিৎসাধীন। কিন্তু, দৃষ্টিশক্তি প্রায় হারিয়েছে। তাঁর দৃষ্টিশক্তি আদৌ পুরোপুরি আর ফিরবে কি না তা নিয়ে সন্দিহান চিকিৎকরাও।

    জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রীর নাম রিমা চক্রবর্তী। স্কুল এবং তার পরিবার সূত্রে খবর, ঘটনার দিন রিমা মিড-ডে মিল খাওয়ার জন্য বাসন বের করছিল। তার পাশেই তার দুই সহপাঠী একটা ডট পেন নিয়ে টানাটানি করছিল। একজন সহপাঠী পেনটি ছিনিয়ে নেয় এবং তা গিয়ে লাগে রিমার চোখে। সেই সময় বিশেষ কিছু বোঝা যায়নি। কিছুক্ষণ পরেই বিষয়টি জানাজানি হয়। রিমার মা শ্যামলী চক্রবর্তী বলেন,  “এক শিক্ষিকা দেখতে পেয়ে আমার মেয়েকে চোখে জলের ঝাপটা দিতে বলেন। মেয়ে তাই করে। এরপর সে আরও ক্লাস করে কিন্তু ধীরে ধীরে সমস্যা বাড়তে থাকে।” এদিকে, ছুটির পর রিমার পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া দাদা বোনকে নিতে এলে এক শিক্ষিকা তাকে বলেন, বোনের চোখে লেগেছে। মাকে বলবি ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে। বাড়ি ফেরার পর মেয়ের চোখের অবস্থা খারাপ দেখে শ্যামলীদেবী দ্রুত মেয়েকে বাগনানের এক চোখেন ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান। ওই চিকিৎসক ভালো করে পরীক্ষা করার পর তাকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন।

    মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা জানান অস্ত্রোপচার করতে হবে। পরের দিন প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার হয়। চারদিন হাসপাতালে থাকতে হয়। এখনও রিমার চোখে দৃষ্টিশক্তি পুরোপুরি ফেরেনি, সে চোখে ঝাপসা দেখছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হয়তো তার দৃষ্টিশক্তির খুব একটা উন্নতি হবে না। অস্ত্রোপচার করার ফলে অন্য চোখটির ক্ষতি হবে না। না হলে অন্য চোখটিও ক্ষতিগ্রস্ত হত। ঘটনার পর ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাদের দায়বদ্ধতা ও ছাত্রীদের প্রতি নজর নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। চোখের মতো স্পর্শকাতর জায়গায় আঘাতের পরও কেন তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে রিমাকে কোনও চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলেন না, উঠছে সেই প্রশ্নও। যদিও, স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রীতা আদক বলেন, “বিষয়টি জানার পরে আমরা সবাই মিলে মেডিক্যাল কলেজে যাই। সেখান থেকে ছুটি নিয়ে আসার পরে বাড়িতেও দেখতে যাই।” কিন্তু, কেন স্কুল থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া গেল না, তার উত্তর মেলেনি।
  • Link to this news (প্রতিদিন)