টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: রাজ্যের বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘থ্রেট কালচার’ নিয়ে ইদানিংকালে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। বিশেষত মেডিক্যাল কলেজগুলিতে এই ‘রোগ’ যে অধিক ছড়াচ্ছে, তার হাজার নমুনা পাওয়া গিয়েছে ইতিমধ্যে। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ। সেখানকার বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামল ডাক্তারি পড়ুয়াদের একাংশ। শনিবার রাত থেকে পোস্টার হাতে চলছে আন্দোলন। তাঁদের প্রশ্ন, “রোগীদের জন্য কথা বলতে গেলেই যদি হুমকি মেলে, তবে ডাক্তারি পড়ার অর্থ কী?” অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু।
ঠিক কী ঘটেছে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে? ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, মূল সমস্যা তৈরি করছেন চেস্ট মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অভিজিৎ মণ্ডল। রোগীদের নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে গেলেই রীতিমতো হুমকি দিচ্ছেন তিনি। কখনও কথায়, কখনও কাজে। রোগীদের চিকিৎসা নিয়ে কোনও আলোচনাই করা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসা করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ডাক্তারি পড়ুয়াদের। তাঁদের বক্তব্য, চিকিৎসা পরিষেবার বেহাল দশা নিয়ে প্রশ্ন তোলা অপরাধের শামিল হয়ে গিয়েছে। এভাবে হাসপাতালের অন্দরেই ‘থ্রেট কালচার’ চললে পড়াশোনাই বা কীভাবে হবে? এই প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।
চেস্ট মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে শনিবার রাত থেকেই হাতে পোস্টার নিয়ে আন্দোলনে বসেছেন ছাত্রছাত্রীরা। পোস্টারে লেখা, ‘চিকিৎসা নয়, কেন থ্রেট?’ কারও পোস্টারে লেখা, ‘রোগীদের কথা বললেই যদি হুমকি মেলে, তবে ডাক্তারি পড়ার মানেটাই বা কী?’ এক ছাত্রের কথায়, “রোগীদের সমস্যার কথা তুললে যদি আমাদেরই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়, তবে হাসপাতালকে তো ‘সাইলেন্ট জোন’ লিখে দেওয়া উচিত।” আরও প্রশ্ন, চিকিৎসার মান নিয়ে প্রশ্ন তুললেই যদি ‘থ্রেটে’র মুখে পড়তে হয়, তাহলে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, এই ‘থ্রেট কালচার’ কি সত্যিই রোগী আর ছাত্রছাত্রীদের সুস্থ রাখতে পারে?
পড়ুয়াদের কাছ থেকে সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয় শুনেছেন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুন্ডু। তিনি অবশ্য আশ্বস্ত করার ভঙ্গিতে বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। তদন্ত হবে। দোষ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের হাসপাতাল রোগী ও চিকিৎসা শিক্ষার জন্য, কাউকে ভয় দেখানোর জন্য নয়।”