হিরাপুরে দামোদর নদে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের (পিএইচই) কালাঝরিয়া জলপ্রকল্পের পাম্পিং স্টেশনের সেতু ভেঙে পড়ার পরে খনি অঞ্চলের গ্রামীণ এলাকায় জল-সমস্যা তীব্র হচ্ছে। পিএইচই সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ষায় নদে প্রচুর জল থাকায় সেতু তৈরি-সহ মেরামতের কাজ করা যাবে না। কারণ, এই অবস্থায় ‘কালেক্টর ওয়েল’ (নদীবক্ষে কুয়োর ভিতরে দেওয়াল ছিদ্র করে পাইপ ঢুকিয়ে নদীর জল ভর্তি করা হয়। এর পরে পাইপের মাধ্যমে নদীর পাড়ে জলাধারে পাঠিয়ে সেখান থেকে বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হয়) গিয়ে সমীক্ষা করা সম্ভব নয়। পুরোপুরি জল না কমা পর্যন্ত কাজ করা সম্ভব নয়।
পিএইচই সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৮৫-১৯৮৬ আর্থিক বর্ষে সাড়ে ১০ লক্ষ মিলিয়ন গ্যালন জলধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন জলপ্রকল্প তৈরি করা হয়। কালেক্টর ওয়েল থেকে ৬.৬ লক্ষ মিলিয়ন গ্যালন জল তোলা হত। এ ছাড়া, দামোদরে ৫০টি নলকূপ আছে। এই নলকূপ থেকে দৈনিক সাড়ে তিন থেকে চার লক্ষ মিলিয়ন গ্যালন জল তুলে সরবরাহ করা হয়। কালাঝরিয়া এবং আসানসোলের মহিশীলা, জামুড়িয়ার বেনালি ও পরিহারপুরে একটি করে জলাধার আছে। এগুলো-সহ রানিগঞ্জের সিহারসোল, মঙ্গলপুর, জামুড়িয়ার চিচুড়িয়া ও পাণ্ডবেশ্বরের ছোড়ায় একটি করে জলধারে জল পাঠানো হয়। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে নলকূপের মাধ্যমে উত্তোলিত জল মহিশীলা, কালাঝরিয়া, বেনালি ও পরিহারপুরে পাঠানো হচ্ছে। দামোদরের দামালিয়ায় একটি পৃথক জলপ্রকল্প আছে। ওই প্রকল্প থেকে সিহারসোল এবং মঙ্গলপুরের জলাধারে জল পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু চিচুড়িয়া এবং ছোড়া জলাধারে জল পাঠানো যাবে না। এই দু’টি জলাধার থেকে জামুড়িয়ার পাঁচটি এবং পাণ্ডবেশ্বরের দু’টি পঞ্চায়েত এলাকায় জল সরবরাহ করা হয়। এই সব এলাকায় অজয় নদের একাধিক জলপ্রকল্প থেকে ট্যাঙ্কারে জল পাঠানো হবে। সেই কাজ শুরু হয়েছে বলে দাবি পিএইচই-র।
জামুড়িয়ার কেন্দার বাসিন্দা জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, এ পর্যন্ত তাঁরা ট্যাঙ্কারে জল পাননি। একই অভিযোগ ডোবরানা পঞ্চায়েতের একাধিক বাসিন্দার। পাণ্ডবেশ্বরের হরিপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান গোপীনাথ নাগ দাবি করেছেন, “শুক্রবার থেকে আমাদের পঞ্চায়েত এলাকায় ট্যাঙ্কারে জল পাঠানো হচ্ছে। তবে তা জনসংখ্যার অনুপাতে পর্যাপ্ত নয়। এ ভাবে চলতে থাকলে জল-সঙ্কট তীব্র হবে। ক্ষোভ দেখা দেবে। তা ইতিমধ্যে বোঝা যাচ্ছে।”
পিএইচই-র এক আধিকারিক জানান, এই অবস্থায় শুধু পানীয় জলই সরবরাহ করা পরিকল্পনা আছে। বর্ষায় কুয়ো, পুকুরে জল থাকায় গ্রামীণ এলাকায় খুব একটা সমস্যা হবে না বলেই তাঁদের ধারণা।