পুজোর থিমেও এ বার ‘বাংলা ও বাঙালি’! নীলবাড়ির লড়াই কি তবে ঢুকে পড়ল কলকাতার শারদোৎসবের আঙিনাতেও?
আনন্দবাজার | ২৭ জুলাই ২০২৫
নীলবাড়ির লড়াই এগিয়ে আসছে। তার আগেই আসছে পুজো। নীলবাড়ি নবান্ন দখলের জন্য প্রচারে এ বার বাঙালি আবেগ যে অন্যতম বড় ‘থিম’ হতে চলেছে তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেই বাঙালিত্ব ছুঁয়ে ফেলল পুজোর থিমকেও। যদিও পুজোর উদ্যোক্তারা জানিয়ে দিচ্ছেন, বাঙালি অস্মিতা রাজনীতির ময়দানে বিষয় হয়ে ওঠার আগেই তাঁরা নিজেদের পুজোর বিষয় ভেবে নিয়েছিলেন। বাগুইআটির সেই ক্লাবের নাম অশ্বিনীনগর বন্ধুমহল। এ বছর তাদের ৪৫তম দুর্গোৎসব। সেই পুজোরই থিম ‘বাংলা ও বাঙালি’।
প্রতি বছর নিত্যনতুন থিমে নিজেদের শারদোৎসবের মঞ্চকে সাজিয়ে তোলে বাগুইআটির এই পুজো কমিটি। গত বছর যেমন তাদের থিমভাবনায় উঠে এসেছিল বাংলার বারোয়ারি পুজোর ইতিবৃত্ত। ‘বারো-ইয়ারি’ নাম দিয়ে বাংলার বারোয়ারি পুজো প্রসঙ্গে দর্শনার্থীদের অবগত করিয়েছিল তারা। কিন্তু এ বার তাদের পুজোর বিষয়ভাবনার নাম প্রকাশ্যে আসার পরই শুরু হয়েছে গুঞ্জন। তবে এই ভাবনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই বলেই দাবি করছেন পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা। তাদের দাবি, এ বছর মে মাসেই অশ্বিনীনগর বন্ধুমহল তাদের পুজোর থিম, এমনকি থিমের নামও চূড়ান্ত করে ফেলেছিল।
পুজো কমিটির অন্যতম কর্তা স্বরূপ নাগের কথায়, ‘‘আমাদের থিমের পুরো নামটা জানলেই যাবতীয় দ্বিধাদ্বন্দ্ব কেটে যাবে। আমাদের পুজো থিম ‘বাংলা ও বাঙালি, সমৃদ্ধির আদ্যোপান্ত’। এই থিমের মাধ্যমে ঐতিহাসিক এবং পুরাতাত্ত্বিক ভাবে আমরা বাঙালিকে বাংলা এবং বাঙালির ইতিহাস প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানাতে চাই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রতি বছর পুজো শেষ হলেই আমরা পরের বছরের পুজোর প্রস্তুতি শুরু করে দিই। এ ক্ষেত্রে শিল্পী এবং আমরা পুজো কমিটির কর্তারা যৌথ ভাবে আলোচনা করেই এই বিষয়টিকে থিম হিসাবে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমাদের এই সিদ্ধান্তকে কোনও ভাবেই রাজনীতির সঙ্গে মিলিয়ে দেখা উচিত নয়।’’
পাঁচ জন শিল্পী এই বিষয়ভাবনাকে রূপ দিচ্ছেন। মূল ভাবনা সম্পাদনের দায়িত্বে রয়েছেন শিল্পী সম্রাট ভট্টাচার্য, প্রতিমা গড়বেন শিল্পী পিন্টু সিকদার, আলোকসজ্জায় প্রেমেন্দু বিকাশ চাকী, আবহসঙ্গীতে দীপময় দাস এবং স্থাপত্যশিল্পী সুবিমল দাস। কোনও বিতর্কে না-গিয়ে এই পুজো কমিটির লক্ষ্য বাঙালিকে বাংলা এবং বাঙালির গরিমা প্রসঙ্গে অবগত করানো। তবে পুজোর সাজসজ্জায় কী ভাবে বাঙালি সংস্কৃতি এবং কৃষ্টিকে তুলে ধরা হচ্ছে, সে ব্যাপারে এখন কোনও মন্তব্য করতে নারাজ পুজো কমিটির কর্তারা। তাদের কথায়, ‘‘এ বছর সেপ্টেম্বর মাসের শেষেই দুর্গোৎসব। তার আগেই আমাদের পুজোর যাবতীয় স্বরূপ প্রকাশ্যে আসবে।’’