• রেলে চাকরির স্বপ্ন যেন দুঃস্বপ্ন! বাবা-মার মুখে ভাত তুল দিতে ট্রেনে ঝুড়িভাজা বিক্রি হাবড়ার ছাত্রের
    প্রতিদিন | ২৮ জুলাই ২০২৫
  • অর্ণব দাস, বারাসত: স্বপ্ন ছিল রেলে চাকরি করার। কিন্তু নির্মম বাস্তব তাতে দাঁড়িয়েছে বাধা হয়ে। ফলে রেলে চাকরির স্বপ্ন যেন দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে হাবড়ার নাবালকের কাছে। বই, খাতা ছেড়ে বছর পনেরোর কিশোরের হাতে এখন ঝুড়িভাজা, কাঠি ভাজা, পাপরের প্যাকেট। ঠিকানা হাবড়া-শিয়ালদহ লোকাল!

    একবছর আগেও কিশোর জানত না তার জন্য অপেক্ষায় এরকম এক দিন। হাবড়ার জিয়লগাছি ওই কিশোর হাবড়া পূর্বাঞ্চল হাইস্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনো করেছ। তাঁর বাবা কৃষ্ণপদ দাম চাকরি করতেন একটি বেসরকারি সংস্থায়। কিন্তু গত বছরে তাঁর কিডনি খারাপ হয়ে যায়। মা জয়ন্তীরানির দু’দুবার ব্রেন স্ট্রোক হয়। তারপর কার্যত দু’জনেই শয্যাশায়ী হয়ে যাওয়ায় পরিবারের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন হয়েছে রাজ্য সরকারের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ১ হাজার টাকা ও রেশনের চাল। তাই সংসারে ভার চেপে বসেছে কিশোরের কাঁধে।

    তাই বাধ্য হয়ে ট্রেনে ট্রেনে ঘুরে ঝুড়ি ভাজা, পাপর বিক্রি শুরু করে সে। সারাদিন হকারি করে তার শ’তিনেক টাকা রোজগার হয়। বাড়িতে ফিরে সেই টাকা তুলে দেয় মায়ের হাতে। এই উপার্জন দিয়েই সংসার চালানো, বাবার ডায়ালিসিস, মায়ের ওষুধ সবটা করতে হয়। শুভজিৎ জানায়, পড়াশুনো করে রেলে চাকরি করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু বাবার ও মায়ের চিকিৎসা, সংসার চালাতে বাধ্য হয়ে ট্রেনে হকারি করে। তাই ক্লাস এইট পর্যন্ত পড়াশুনো করে আর করতে পারেনি। মা জয়ন্তী দাম বলেন, এইটুকু ছেলের কাঁধে সংসারের ভার। এমন দুর্দিন আসবে কোনওদিন ভাবেননি। ছেলের পরিণতি ভেবে চোখে জল মায়ের।
  • Link to this news (প্রতিদিন)