মহারাষ্ট্রে কাজ করতে গিয়ে বাংলাদেশি সন্দেহে পাকড়াও! নদিয়ার বাড়িতে ফিরলেন ৩ পরিযায়ী শ্রমিক
প্রতিদিন | ২৮ জুলাই ২০২৫
রমনী বিশ্বাস, নদিয়া: বিজেপিশাসিত রাজ্যে কাজে গিয়ে হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে বাংলার শ্রমিকদের। বাংলায় কথা বলার ‘অপরাধে’ বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে সেই দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনার প্রতিবাদ করে পথে নেমেছেন। নতুন করে ভাষা আন্দোলনের ডাকও দিয়েছেন তিনি। এই আবহে মহারাষ্ট্র থেকে নদিয়ার তিন শ্রমিক ঘরে ফিরলেন। বাংলাদেশি সন্দেহে তাঁদেরও পাকড়াও করা হয়েছিল সেই রাজ্যে।
জানা গিয়েছে, নদিয়ার করিমপুরের বাসিন্দা সুকান্ত মণ্ডল, তীর্থ মণ্ডল ও মন্টুলাল সরকার মহারাষ্ট্রে কাজের জন্য গিয়েছিলেন। পুণে এলাকায় তাঁরা সেন্টারিং-এর কাজ করছিলেন। বাঙালি হওয়ায় তাঁরা নিজেদের মধ্যে বাংলাতেই কথাবার্তা বলেন সেখানে। আর সেই বাংলা ভাষায় কথা বলাই যেন কাল হল। গত ২৪ তারিখ তাঁদের আস্তানায় হানা দেন পুণের ক্রাইম ব্রাঞ্চের আধিকারিকরা। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে ওই তিন শ্রমিককে পাকড়াও করে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের কাছে জানানো হয়েছিল, তাঁরা নদিয়ার করিমপুরের বাসিন্দা। এদেশের বৈধ নাগরিক হিসেবে সব পরিচয়পত্র তাঁদের কাছে আছে।
পুণের পুলিশের থেকে করিমপুর থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। করিমপুর থানার পুলিশ ওই তিন পরিবারের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করে। ওই তিন শ্রমিকের পরিচয়পত্র, নথি পরিবারের থেকে নিয়ে পুণেতে পাঠানো হয়। বাংলাদেশি সন্দেহে পাকড়াওয়ের ঘটনা জানতে পেরে প্রবল দুশ্চিন্তায় পড়েছিল শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা। আতঙ্কিত হয়ে থাকেন পরিজনরা। যেন দ্রুত ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের ছেড়ে দেওয়া হয়, মহারাষ্ট্র পুলিশকে জোরালোভাবে করিমপুর থানার পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল। শেষপর্যন্ত তিনজনকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় মহারাষ্ট্র পুলিশ। মুক্ত হয়েই বাড়ি ফেরার জন্য রওনা হয়েছিলেন তিনজন। অতি সম্প্রতি ওই তিনজন বাড়ি ফিরে এসেছেন। ঘরের লোক ঘরে ফিরে আসায় স্বস্তি ফিরেছে পরিবারের সদস্যদের। যদিও এখনও আতঙ্কিত ওই তিন পরিযায়ী শ্রমিক। তেমনভাবে কারও সঙ্গে কথাও বলছেন না তাঁরা। প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনজনেই। উল্লেখ্য এ পর্যন্ত কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশের অন্তর্গত এলাকার ১১০ জন পরিযায়ী শ্রমিককে ভিন রাজ্যে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করা হয়েছিল। প্রশাসনের সহযোগিতায় তারা সকলেই মুক্তি পেয়েছেন।