• বাঁকুড়ায় একরত্তিকে ‘খুনে’র পর ৭০০ মিটার দূরের ঝোপে রাখা হয় দেহ! পুলিশি তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য
    প্রতিদিন | ২৮ জুলাই ২০২৫
  • টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: দীর্ঘদিন ধরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনও শারীরিক সম্পর্ক ছিল না! তারপরেও স্ত্রী গর্ভবর্তী হয়ে পড়েছিলেন। আর তখন থেকেই স্বামীর মনে স্ত্রীর পরকীয়া নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল বলে খবর। কন্যা সন্তান জন্মের পরও সেই ক্ষোভ ছিল ওই ব্যক্তির মনে। পরে আবার ওই পরিবার জানতে পারে, একরত্তি শিশুর পায়ের সমস্যা আছে। আর পাঁচজনের মতো নিজের পায়ে সে চলাফেরা করতে পারবে না। তারপরই বছর দেড়েকের ওই কন্যা সন্তানকে ‘খুন’ করার মনস্থ করেছিল বাবা। সব কিছু জেনেও মুখ বুজে থেকে স্বামীকে সাহায্য করেছেন স্ত্রী। বাঁকুড়ার হাড়হিম করা খুনের ঘটনায় উঠে আসছে একাধিক তথ্য।

    বুধবার সকাল থেকে বাঁকুড়ার সানবাঁধা অঞ্চলের ভূতশহর গ্রামে ওই শিশুকন্যা নিখোঁজ হয়ে যায়। পুলিশ খোঁজাখুঁজি, তল্লাশি চালালেও কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। গতকাল শনিবার স্বামী প্রশান্ত বাউড়িকে জেরা করে পুলিশ। তখনই চাপের মুখে ভেঙে পড়ে শিশুকে খুনের কথা স্বীকার করে সে। শুধু তাই নয়, শিশুকন্যার মা মণি বাউড়িকেও জিজ্ঞাসাবাসের জন্য পাকড়াও করে। একসময় স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই খুনের কথা স্বীকার করে। গুণধর বাবা-মাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ, রবিবার ধৃত স্বামী-স্ত্রীকে বাকুড়া জেলা আদালতে তোলা হয়েছিল। বিচারক প্রশান্তকে সাতদিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। মণি বাউড়িকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

    স্বামী-স্ত্রীকে জেরায় পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে মঙ্গলবার রাতে ওই খুন করা হয়েছিল। অভিযোগ, বালিশ চাপা দিয়ে খুন করা হয়েছিল দেড় বছরের শিশুকে। প্রশান্ত ভোরের দিকে বাড়ি থেকে প্রায় ৭০০ মিটার দূরে পুকুরপাড়ের ঝোপের ভিতর মৃতদেহ ফেলে আসে। পরদিন সকালে স্বামী-স্ত্রী রটিয়েছিল মেয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে। শনিবারই ওই ঝোপের কথা জানিয়েছিল প্রশান্ত। ঝোপ থেকে উদ্ধার করা হয় হাড়গোড়। পুলিশের অনুমান, ওই শিশুকন্যার মৃতদেহ শেয়ালে খেয়ে ফেলেছে। হাড়গুলি ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত স্বামী-স্ত্রীকে গ্রামে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে।

    এভাবে নিজের কোলের সন্তানকে খুন করার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। স্বামীর এই কুকর্মের কথা কীভাবে চেপে গেলেন স্ত্রী? সেই প্রশ্নও উঠেছে। ধৃত স্বামী-স্ত্রীর কঠিন শাস্তির দাবি তোলা হয়েছে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)