২৫ বছর আগের ‘লাল সন্ত্রাস’ স্মরণ করে বিজেপিকে হুঁশিয়ারি, নানুরে ভাষা রক্ষার লড়াই ফিরহাদের
প্রতিদিন | ২৮ জুলাই ২০২৫
দেব গোস্বামী, বোলপুর: ২৫ বছর আগে সিপিএমের সন্ত্রাসের বলি হতে হয়েছিল দরিদ্র কৃষক, খেতমজুরদের। আর আজ বিজেপি ‘ভাষা সন্ত্রাস’ চালাচ্ছে গরিব বাঙালি শ্রমিকদের উপর। এভাবেই বীরভূমের নানুর থেকে দুই ‘ফ্যাসিস্ট’ দলকে বিঁধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথে ভাষা রক্ষার লড়াই শুরু করলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বললেন, ”২৫ বছর আগে সিপিএম সন্ত্রাস চালিয়েছিল। মানুষ সিপিএমকে শূন্য করে ছুড়ে ফেলেছে। আর আজ বিজেপিকে বলছি, তোমরা সাধারণ দরিদ্র বাঙালিদের উপর অত্যাচার করছ। মানুষ ক্ষমা করবে না। বাংলায় অস্তিত্বহীনতায় ভুগছ, তাই জন্য মানুষের উপর এই নির্যাতন?”
একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ থেকেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, ভিনরাজ্যে বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের উপর অত্যাচারের যে ভুরি ভুরি অভিযোগ আসছে, তার জোরাল প্রতিবাদ জরুরি। ২৭ জুলাই ‘নানুর দিবসে’ রবিঠাকুরের মাটি বীরভূম থেকে নয়া রূপে ভাষা আন্দোলন শুরু হোক। তাঁর নির্দেশ মেনে রবিবার নানুরে পৌঁছে যান রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, মলয় ঘটক, জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্যরা। যদিও এদিনের প্রতিবাদ মঞ্চে দেখা যায়নি অনুব্রত মণ্ডলকে। কোর কমিটির সদস্যরা একে একে বক্তব্য রাখেন। সকলের বার্তা, বাংলার অস্মিতা রক্ষার লড়াইয়ে পথ দেখাচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যতদিন না ‘বাঙালি হেনস্তা’ বন্ধ হবে, ততদিন লড়াই চলবে। গোটা বাংলা ‘দিদি’র নেতৃত্বে চোখে চোখ রেখে লড়বে।
এরপর ফিরহাদ হাকিম বক্তব্য রাখতে উঠে ২০০০ সালে নানুরে নির্বিচার গুলিতে কৃষক-খেতমজুরদের হত্যার ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিলেন। বললেন, ”সেদিন (২০০০ সালের ২৭ জুলাই) চাষিদের উপর অত্যাচার করেছিল সিপিএম। আর আজও বিজেপি সেই একই কাজ করছে। শুধু হত্যাকারীর রূপ বদলেছে। বিজেপি হিন্দু-মুসলিম ভাগ করতে চাইছে। কিন্তু ওরা জানে না যে এই বাংলায় দিদির নাম মমতা হলে ভাইয়ের নাম হয় ফিরহাদ। এই বাংলায় ভেদাভেদ হয় না। কী বলছে? আমরা বাংলাদেশি? বাংলায় থাকলে, কথা বললেই বাংলাদেশি! বিজেপির এসব ফন্দিফিকির বাংলার মানুষ মেনে নেবে না। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সারাজীবন অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, এখনও করছেন। আর আমরা তাঁকে অনুসরণ করি। আমাদের এই প্রতিবাদ চলবে। আগামিকাল এখান থেকে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তিতে প্রণাম জানিয়ে মিছিল শুরু করবেন আমাদের নেত্রী।”
এদিন বীরভূমের নানুর ছাড়াও বিভিন্ন জেলা এবং শহর কলকাতায় ভাষা রক্ষার লড়াইয়ের প্রথম ধাপ হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেস মিছিল করেছে। বর্ণমালা নিয়ে হাঁটতে দেখা গিয়েছে অনেককে। নেতৃত্বে ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। সোমবার বোলপুরের ভাষা আন্দোলনের মিছিলে হাঁটবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।