• রতুয়ায় ভাঙন পরিদর্শনে এসে বিক্ষোভের মুখে এমপি খগেন
    বর্তমান | ২৮ জুলাই ২০২৫
  • সংবাদদাতা, চাঁচল: গঙ্গা, ফুলহার এবং কোশি নদীর ত্রিমুখী স্রোতে দিশেহারা মালদহের রতুয়া-১ ব্লকের বিলাইমারি এবং মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক এলাকা। ভাঙনে গঙ্গায় তলিয়ে যাচ্ছে বসতবাড়ি। বিলীন হচ্ছে কৃষিজমিও। রাজ্য ও কেন্দ্রের টানাপোড়েনে ভাঙন রোধের কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করে ফুঁসছেন দুর্গতরা। 

    রবিবার মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু মহানন্দাটোলা পঞ্চায়েতের ভাঙন কবলিত এলাকাগুলি পরিদর্শনে গেলে তাঁকে সামনে পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ভাঙন কবলিতরা। ভিটেমাটি হারানোর বেদনা নিয়ে দুর্গতদের দাবি, ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাজনীতিকে দূরে সরিয়ে অবিলম্বে স্থায়ী সমাধান করা হোক। দুর্গত উদয় মণ্ডলের অভিযোগ, রাজ্য ও কেন্দ্রের সংঘাতের ফলে স্থায়ীভাবে নদী বাঁধ নির্মাণের কাজ হচ্ছে না। রাজনীতি চাই না। আমরা চাই ভিটেমাটি ও চাষের জমিটুকু বাঁচুক। মুনিরামটোলার ধনঞ্জয় মণ্ডল বলেন, নদীর পাড় ভাঙতে ভাঙতে আমার বাড়ির দুয়ারে পৌঁছেছে। তাই আগে বাড়ি ভেঙে অন্যত্র চলে যাচ্ছি। কিন্তু আসবাবপত্র ও ইট কোথায় রাখব, দুশ্চিন্তায় রয়েছি। সঠিক সময়ে কাজ হলে যাযাবরের জীবন কাটাতে হতো না।

    স্থানীয় সূত্রে খবর, শুধু মহানন্দটোলা নয়, এ বছর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পশ্চিম রতনপুর, কান্তুটোলা, শ্রীকান্তটোলা, মুলিরামটোলা ও জিতুটোলা। এই এলাকার বহু পরিবার গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। কেউ সরকারি ত্রাণ শিবিরে দিন কাটাচ্ছেন, আবার অনেকে উঁচু জায়গায় ত্রাণের ত্রিপল খাটিয়ে পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। ফুলহার নদীর জল গিয়ে পড়ে গঙ্গায়। কিন্তু বর্তমানে গঙ্গার জলস্তর বেশি থাকায় সেই জল উল্টোদিকে ফিরে এসে ফুলহার এবং কোশির সংযোগস্থলে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করছে। যার ফলে রতুয়ার মহানন্দাটোলা এবং বিলাইমারি পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন গ্রাম নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার মুখে রয়েছে। 

    এদিন পরিস্থিতি দেখার পর উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, রাজ্য সরকার কেন্দ্রকে এখনও ডিপিআর দেয়নি। সেই কারণে চাইলেও কেন্দ্র অর্থ বরাদ্দ করতে পারছে না। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বহুবার চিঠি দিয়েছি। কাজ না হওয়ায় মানুষের ক্ষোভ থাকা স্বাভাবিক। 

    পাল্টা এপ্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের মালদহ জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বকসি বলেন, ওই এলাকার মানুষ সাংসদকে নির্বাচিত করেছেন। তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ আগেই হওয়া উচিত ছিল। সাংসদ রতুয়ায় না গিয়ে দিল্লিতে যান। বরাদ্দ এনে ভাঙন কবলিতদের বাঁচান। 

    এদিন বিক্ষোভকারী বেচন যাদব বলেন, আমরা সাংসদের কাছে এক কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছিলাম। যদি টাকা কম হতো, আমরা চাঁদা তুলে বোল্ডার কিনে বাঁধের কাজ করতাম। কিন্তু টাকা মেলেনি বলে এই অবস্থা।

    চাঁচলের মহকুমা শাসক শৌভিক মুখোপাধ্যায় বলেন, দুর্গতদের জন্য ত্রাণ শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রান্নার পাশাপাশি শুকনো খাবার দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসন পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে।
  • Link to this news (বর্তমান)