• লিঙ্ক ক্যানেলে বালি তোলা শুরু, তিস্তা-করলায় খনন কবে, প্রশ্ন
    বর্তমান | ২৮ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: অবশেষে গজলডোবা ব্যারেজ লাগোয়া তিস্তা-মহানন্দা লিঙ্ক ক্যানেলে বালি তোলার কাজ শুরু হয়েছে। মিনারেল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ট্রেডিং কর্পোরেশন লিমিটেডকে (এমডিটিসিএল) ওই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বালি ও পলি জমে থাকায় নাব্যতা হারিয়েছিল তিস্তা-মহানন্দা লিঙ্ক ক্যানেল। ওই ক্যানেলে জলের অভাব দেখা দেওয়ায় একদিকে যেমন বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষকরা সেচের জল পাচ্ছিলেন না, তেমনই পলি জমে ফুলবাড়িতে থাকা শিলিগুড়ি পুর নিগমের জল প্রকল্পের পুরনো ইনটেক ওয়েল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাছাড়া ক্যানেলে সারা বছর পর্যাপ্ত জল না থাকায় ফাঁসিদেওয়ার তিনটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে কিছুটা হলেও প্রভাব পড়ছিল বলে জানা গিয়েছে। তিস্তা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, প্রাথমিক ভাবে তিস্তা-মহানন্দা লিঙ্ক ক্যানেলে ১০ কিমি এলাকাজুড়ে বালি ও পলি তোলার কাজ হবে।

    এদিকে, লিঙ্ক ক্যানেলে বালি তোলার কাজ শুরু হলেও তিস্তা এবং জলপাইগুড়ি শহরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া করলা নদীতে কবে খনন শুরু হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এনিয়ে রবিবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন, তিস্তা-মহানন্দা লিঙ্ক ক্যানেলে বালি ও পলি তোলার কাজ শুরু হয়েছে। ধাপে ধাপে তিস্তা সহ উত্তরবঙ্গের অন্য নদীগুলির নাব্যতা ফেরাতেও ড্রেজিং হবে। কিছুটা কাজ এমডিটিসিএল করছে। সেচদপ্তরও কিছুটা করবে। ২০১৫ সালের পর থেকে কেন্দ্রীয় সরকার নদী ভাঙন, বাঁধ নির্মাণ কিংবা বন্যা নিয়ন্ত্রণে বাংলাকে কোনও টাকা দেয়নি। তবুও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা সবটাই করছি।

    সেচদপ্তর সূত্রে খবর, তিস্তা ও করলার নাব্যতা ফেরাতে বালি-পলি তোলার ব্যাপারে ইতিমধ্যে রাজ্যের তরফে সবুজ সঙ্কেত মিলেছে। এক্ষেত্রেও ‘নো কস্ট টু দ্য স্টেট’ ভিত্তিতে কাজ হবে। অর্থাৎ নদী থেকে বালি কিংবা পলি তোলার কাজে রাজ্যের কোনও অর্থ খরচ হবে না। যে সংস্থা নদী থেকে ওই বালি ও পলি তুলবে, তারা সেসব নিয়ে নেবে। বিনিময়ে তারা রাজ্যকে রয়্যালটি দেবে। সেভকের কাছে লালটং চমকডাঙি, গজলডোবার মিলনপল্লি, ক্রান্তির চ্যাংমারি, ময়নাগুড়ির বাঁকালি সহ প্রথম পর্যায়ে তিস্তায় প্রায় ৪০ কিমি এলাকায় ড্রেজিংয়ের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কোথায় কেমন বালি ও পলি রয়েছে তা পরীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। তিস্তার বালি ও পলির ধরন কেমন তা জানতে বেশকিছু জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সেই নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় সেচদপ্তরের ল্যাবে।

    এনিয়ে গত এপ্রিলে জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শমা পারভীনের নেতৃত্বে বৈঠকও হয়। সেখানে বেশ কয়েকটি সংস্থা তিস্তা ও করলার বালি-পলি তুলতে আগ্রহ প্রকাশ করে। সেচমন্ত্রীও এনিয়ে কলকাতায় মিটিং করেন। যদিও এরপর কয়েকমাস কেটে গেলেও তিস্তায় ড্রেজিংয়ের বিষয়টি কতটা এগল তা নিয়েই এখন প্রশ্ন। সেচদপ্তরের উত্তরপূর্বের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিফ ইঞ্জিনিয়ার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক বলেন, তিস্তা-করলা নদী থেকে বালি-পলি তোলার বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে সেরে ফেলেছি আমরা। রাজ্যকে সবটা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন কবে থেকে কাজ শুরু হবে, তা আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়। সেচদপ্তর সূত্রে খবর, তিস্তার পাশাপাশি জলপাইগুড়ি শহরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া করলা নদীতে প্রায় ১৫ কিমি ড্রেজিংয়ের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)