• তিন কোটি ব্যয়ে সরকারি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল তৈরি হয়েও হস্তান্তরে জটিলতা, বিতর্ক
    বর্তমান | ২৮ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: পাঁশকুড়ায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল তৈরি হলেও রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তর তা অধিগ্রহণ করছে না। এর ফলে ওই এলাকার ছেলেমেয়েদের বিনা পয়সায় ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়াশোনার স্বপ্ন অধরা থাকছে। জেলাশাসক উচ্চশিক্ষা দপ্তরকে চিঠি করার পরও ঠিকাদার সংস্থার কাছ থেকে হস্তান্তর আটকে রয়েছে। এর নেপথ্যে মেচগ্রাম সংলগ্ন এলাকার একাধিক বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ভূমিকা থাকতে পারে বলে এলাকায় গুঞ্জন ছড়িয়েছে। সরকারি বিদ্যালয়ের মতো মেচগ্রাম ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় ইংরেজি মাধ্যম বেসরকারি স্কুলেও পড়ুয়া সংখ্যা দ্রুত কমছে। এই অবস্থায় সরকারি ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ে বিনা পয়সায় পড়াশোনার সুযোগ তৈরি হলে বেসরকারি স্কুলের অবস্থা আরও খারাপ হবে। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী বলেন, ওই ভবনের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। সেটি হস্তান্তরের জন্য উচ্চশিক্ষা দপ্তরকে চিঠি দিয়েছি। যদিও দপ্তর এখনও সেটি গ্রহণ করেনি। দপ্তর থেকেই শিক্ষক নিয়োগ হবে।

    পাঁশকুড়া পুরসভার কনকপুরে মাল্টি সেক্টরাল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টে (এমএসডিপি) তিন কোটি টাকা খরচে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল তৈরি হয়েছে। বিনা খরচে সিবিএসই মাধ্যমে পড়াশোনার সুযোগ করে দিতেই এই উদ্যোগ। সেই ভবন তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। ভবনের ভিতর থেকে প্রচুর সামগ্রী চুরির ঘটনাও ঘটেছে। গত ১৫জুলাই এনিয়ে পাঁশকুড়া থানায় এফআইআর দায়ের করেছে নির্মাণকারী সংস্থা। আশ্চর্যের বিষয় হল, ভবন তৈরি হওয়ার পরও রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তর তা গ্রহণ করছে না। সেটি ঠিকাদার সংস্থার অধীনে রয়েছে। জেলাশাসক ওই ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল উচ্চশিক্ষা দপ্তরকে হস্তান্তরের জন্য দু’মাস আগে চিঠি পাঠানোর পরও কোনও হেলদোল নেই।

    আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের ছেলেমেয়েরাও যাতে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ার সুযোগ পায়, সেই লক্ষ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ওই স্কুল গড়ে উঠেছে। অথচ, বিনা পয়সায় ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়াশোনা করার সুযোগ মিলছে না। কারণ, সেটির হস্তান্তর প্রক্রিয়া আটকে রয়েছে। ভবন তৈরি হলেও তা কাজে লাগছে না। এনিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা মধুসূদন প্রামাণিক বলেন, মেচগ্রাম ও সংলগ্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল রয়েছে। সরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল চালু হলে বেসরকারি স্কুলে তার সরাসরি প্রভাব পড়বে। সম্ভবত সরকারি স্কুল চালু না হওয়ার এটাই রহস্য।গত ১৫জুলাই মাদ্রাসা বিষয়ক ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন দপ্তরের যুগ্ম সচিব মহম্মদ নকি ও দপ্তরের জেলা আধিকারিক বিপ্লব সরকার ওই ইংরেজি মাধ্যম স্কুল ভিজিট করেন। সেদিন দেখা যায়, ভবনের তালা ভেঙে প্রচুর জিনিসপত্র চুরি হয়েছে। কবে সেসব চুরি হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। তারপর থেকেই পাঁশকুড়া পুরসভাকে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)