তমলুকে বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার শিক্ষকের মৃতদেহ, দাম্পত্য বিবাদে স্বামী-স্ত্রী আলাদা থাকতেন
বর্তমান | ২৮ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: তমলুক শহরে বন্ধ ঘরের ভিতর থেকে শিক্ষকের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল। মৃতের নাম বিপ্লব মাইতি (৪৯)। তমলুক পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে উত্তরচড়া শঙ্করআড়ায় তাঁর বাড়ি। তিনি নন্দকুমার থানার শ্রীকৃষ্ণপুর হাই স্কুলে রসায়ন বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ বাড়ির ভিতর থেকে তাঁকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে তমলুক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বাড়ির ভিতর থেকে অনেক খালি মদের বোতল উদ্ধার হয়েছে।
তমলুক থানার আইসি সুভাষচন্দ্র ঘোষ বলেন, কীভাবে মৃত্যু হয়েছে তানিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই শিক্ষকের আদিবাড়ি তমলুক ব্লকের কাকগেছিয়া এলাকায়। ২০০৬ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা দিয়ে শিক্ষকতার চাকরি পান। গত চার-পাঁচ বছর ধরে তিনি স্কুলে অনিয়মিত যেতেন। গত মার্চ মাস থেকে স্কুল যওয়া বন্ধ করে দেন। জুন মাস পর্যন্ত তাঁর প্রাপ্য সব ছুটি শেষ হয়ে গিয়েছিল। সেজন্য জুলাই মাস থেকে মাইনে বন্ধ ছিল। এই অবস্থায় স্কুল থেকে অনেকবার প্রধান শিক্ষক ও সহ শিক্ষকরা তাঁকে ফোন করে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। বেশিরভাগ সময় ফোন ধরতেন না। আবার কখনও ফোন ধরে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতেন।
ওই শিক্ষক তমলুক শহরে একটি মস্ত বাড়ি তৈরি করেন। তাঁর স্ত্রী ও এক মেয়ে রয়েছে। কিন্তু, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঠিকমতো বনিবনা না হওয়ায় তাঁরা আলাদা থাকেন। তাঁর স্ত্রী মেয়েকে নিয়ে তমলুক শহরে বাপেরবাড়িতে থাকেন। অন্যদিকে, ওই শিক্ষক একা বাড়িতে থাকতেন। ডিভোর্সের মামলাও চলছে।
ওই শিক্ষকের সঙ্গে তাঁর গাড়ির চালক রাহুল দাস যোগাযোগ রাখতেন। শনিবার রাহুলবাবু দু’বার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি। বিকেল ৫টা নাগাদ আরও একবার ফোন করলে ওই শিক্ষক অসুস্থ বলে জানান। এরপর সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ গাড়িচালক ওই শিক্ষকের বাড়িতে যান। গেটের চাবি এক জায়গায় রাখা থাকত। সেটি গাড়িচালক জানতেন। তিনি সেই চাবি দিয়ে গেটের তালা খুলে ভিতরে ঢুকে দেখেন, মেঝেয় ফ্রিজের কাছে ওই শিক্ষক অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। এরপর ওই গাড়িচালক ভয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রতিবেশীদের বিষয়টি জানান। এলাকার লোকজন গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
শ্রীকৃষ্ণপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক কল্যাণব্রত পাত্র বলেন, আমি ২০২১ সালে এই স্কুলে জয়েন করেছি। তখন থেকেই দেখেছি, ওই শিক্ষক অনিয়মিত। মৃত শিক্ষকের বাড়ি।-নিজস্ব চিত্র