বাংলার বাড়িতে ঢুকল দ্বিতীয় কিস্তি পুজোয় সব ভোক্তার গৃহপ্রবেশ
বর্তমান | ২৮ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: মুখ্যমন্ত্রী স্বপ্ন দেখেছিলেন। দুর্গাপুজোর আগেই হয়তো তা পূরণ হতে চলেছে। কারণ, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রায় ১০০শতাংশ উপভোক্তা বাংলার বাড়ি প্রকল্পে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পেলেন। এরফলে উপকৃত হবে প্রায় এক লক্ষ পরিবার। ব্লক প্রশাসনের মাধ্যমে উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে সেই টাকা পৌঁছে গিয়েছে। প্রশাসনের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মানুষ রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাড়ি পাচ্ছেন। প্রথম পর্যায়ে জেলায় ১ লক্ষ ২হাজার ১১০জন বাড়ি পাচ্ছেন। বাড়ি তৈরির প্রথম ধাপের জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ৬০৩ কোটি টাকা। দ্বিতীয় ধাপেও প্রায় ৬০০ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। তবে বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে কিছু পরিবার পিছিয়ে পড়েছে। তাঁরা কেন পিছিয়ে পড়লেন, তা জানার জন্য তদারকি শুরু হয়েছে।
জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি বলেন, বাংলার বাড়ি প্রকল্পের মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক পরিবার উপকৃত হবে। বাংলার বাড়ি প্রকল্পে এই জেলা অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। নিয়মিত পর্যবেক্ষণের ফলেই সাফল্য এসেছে। আশা করা যাচ্ছে, দ্রুত বাড়ি তৈরির কাজ শেষ হবে। সকলের সহযোগিতা ছাড়া এই কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না।
জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার মানুষের জন্য কিছু কাজ করছে না। বাড়ি তৈরির জন্য টাকা আটকে দেওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আশা করছি, পুজোর সময় বহুজনের গৃহপ্রবেশ হবে।
প্রসঙ্গত, আচমকা কেন্দ্রের তরফে বাড়ি তৈরির টাকা আটকে দেওয়া হয়। বাড়ি না পেয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়তে শুরু করে। কারণ, বর্ষাকালে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল সাধারণ মানুষকে। তবে প্রথম থেকেই রাজ্য সরকারের লক্ষ্য ছিল, সকলের জন্য স্থায়ী বাসস্থান তৈরি করা। তাই কেন্দ্রের উপর ভরসা না করে, রাজ্য সরকার নিজ উদ্যোগেই দ্রুত গৃহহীনদের সমস্যার সমাধান করতে ময়দানে নামে। প্রশাসনের আধিকারিকরা বলেন, রাজ্যেজুড়ে ১২ লক্ষ মানুষ বাংলার বাড়ি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলার প্রশাসনিক অনুষ্ঠান থেকে এই প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। এমনকী, সম্পূর্ণ কাজটি যাতে স্বচ্ছতার সঙ্গে করা হয়, সেই দিকেও বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে।
প্রশাসনের আধিকারিকরা জানান, ২০২১-’২২ সালে তৈরি হওয়া উপভোক্তাদের তালিকার উপর জেলায় তিন লক্ষের বেশি বাড়িতে সার্ভে করার কাজ শুরু করে প্রশাসন। এরপর এক লক্ষ দু’হাজারের বেশি বাড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, বাড়ি তৈরির জন্য কেশপুর ব্লকে ৭২৯৩টি, কেশিয়াড়ি ব্লকে ৬৭৬৫টি, সবং ব্লকে ৮৯৫২টি, ডেবরা ব্লকে ৫৭৬৮টি ও শালবনী ব্লকে ৬৯১৩টি পরিবার দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পেয়েছেন। প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, নিয়ম অনুসারে বাড়ি তৈরির কাজ একটা নির্দিষ্ট ধাপ পর্যন্ত শেষ করতে হবে। এরপর সেই কাজ পোর্টালে আপলোড করার পরেই দ্বিতীয় ধাপের টাকা ঢুকছে।
কেশপুর এলাকার বাসিন্দা সুনীল দাস বলেন, বন্যায় প্রচুর মানুষের বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। আশা করছি, পরের ধাপে সেই সমস্ত পরিবার এই প্রকল্পের আওতায় সুবিধা পাবে। বৃষ্টি কম হলে বহু বাড়ির কাজ পুজোর আগেই শেষ হবে।