• এমআরপির চেয়ে বেশি দাম নিলেই এক বছরের জন্য লাইসেন্স রদ, খুশি চাষিরা
    বর্তমান | ২৮ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: পর্যাপ্ত সার রয়েছে। তাই এই অবস্থায় কেউ কালোবাজারি করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বাঁকুড়া কৃষিদপ্তর হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এমআরপি-র থেকে বেশি দামে সার বিক্রি করলে দপ্তর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর লাইসেন্স এক বছরের জন্য রদ করে দেবে বলে বাঁকুড়ার উপকৃষি অধিকর্তা দেবকুমার সরকার জানিয়েছেন। তবে বাড়ির কাছাকাছি চাহিদা মতো সার পাওয়া না গেলে আশপাশের গ্রামে গিয়ে দোকান থেকে চাষিদের সংগ্রহ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। 

    উপকৃষি অধিকর্তা বলেন, বর্তমানে জেলায় আগামী এক মাসের রাসায়নিক সার মজুত রয়েছে। সম্প্রতি এক মালগাড়ি ভর্তি সার জেলায় এসেছে। তা খাতড়া মহকুমায় পাঠানো হয়েছে। জেলার বাকি দুই মহকুমা বাঁকুড়া সদর ও বিষ্ণুপুরেও পর্যাপ্ত সার মজুত রয়েছে। ফলে চাষিদের চাহিদামতো সার না পাওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। এরপরেও কোনও বিক্রেতা সারের বস্তায় থাকা মূদ্রিত মূল্য বা এমআরপি-র থেকে বেশি দাম নিলে অভিযুক্ত ব্যবসায়ীর লাইসেন্স এক বছরের জন্য সাসপেন্ড করে দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে কৃষিদপ্তরের আধিকারিকরা দাঁড়িয়ে থেকে ওই ব্যবসায়ীর দোকান বা গুদামে থাকা সমস্ত সার মূদ্রিত মূল্যে বিক্রির ব্যবস্থা করবেন। তিনি আরও বলেন, কিছু জায়গায় পরিকল্পনামাফিক ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে অবরোধ, আন্দোলন করা হচ্ছে। কোনও কোনও চাষি আবার আলু চাষের জন্য এখন থেকে ১০:২৬:২৬ সার মজুত করে রাখছেন। তার ফলে স্থানীয়স্তরে কোনও দোকানে সাময়িক সময়ের জন্য সার শেষ হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে চাষিদের পার্শ্ববর্তী এলাকার দোকান থেকে সার সংগ্রহ অথবা গ্রামের দোকানে সার আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।   

    কৃষিদপ্তর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ায় রাসায়নিক সারের ৭৫ জন পাইকারি ও ১২৫৮ জন খুচরো বিক্রেতা রয়েছেন। তাঁরা দোকান ও গুদাম থেকে দৈনিক সার বিক্রি করেন। বর্তমানে বাঁকুড়ার বিভিন্ন ব্লকে সারের কৃত্রিম অভাব তৈরি করে কালোবাজারির অভিযোগ উঠেছে। খাতড়ায় বেশি দামে সার বিক্রির অভিযোগ তুলে রাজ্য সড়ক অবরোধ করে চাষিরা বিক্ষোভ দেখান। গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের বিভিন্ন এলাকাতেও বেশি দামে সার বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। কাপিষ্টা এলাকার চাষিরা বিষয়টি নিয়ে ব্লক প্রশাসনের কাছে মৌখিক অভিযোগ জানিয়েছেন। প্রয়োজনে জেলাস্তরে লিখিত অভিযোগ জানানো হবে বলে স্থানীয় বাসিন্দা রামকৃষ্ণ মণ্ডল জানিয়েছেন। 

    কালোবাজারি সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে কৃষি দপ্তরের সঙ্গে জেলা প্রশাসন বুধবার বৈঠক করে। প্রশাসনের শীর্ষ কর্তা এব্যাপারে কৃষিদপ্তরকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন। ব্লক কৃষি আধিকারিকদের এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উপ কৃষি অধিকর্তা বলেন, ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তারা সারের দোকানগুলি নিয়মিত পরিদর্শন করছেন। কোনও অভিযোগ থাকলে চাষিরা তাঁদের জানাতে পারেন।
  • Link to this news (বর্তমান)