• ‘বর্তমান’-এর খবরে টনক নড়ল জেলা পরিষদের, পুকুর সংস্কার কাজে তদন্ত শেষ না হলে পেমেন্ট নয়
    বর্তমান | ২৮ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: তালডাংরায় পুকুর সংস্কারে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে তদন্তের নির্দেশ দিল বাঁকুড়া জেলা পরিষদ। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঠিকাদারের বিল আটকে রাখার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জেলা পরিষদের আধিকারিকরা কড়া অবস্থান নিয়েছেন। জনপ্রতিনিধিদের একাংশ তদন্তে নিমরাজি থাকলেও আধিকারিকরা দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের সঙ্গে আপোস করবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। উল্লেখ্য, পুকুর সংস্কারে অনিয়ম নিয়ে সম্প্রতি ‘বর্তমান’ পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তারপরই জেলা পরিষদ নড়েচড়ে বসে। জেলা পরিষদের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, ভারপ্রাপ্ত ‌ই঩ঞ্জিনিয়ারদের বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে বলা হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে পেমেন্ট দিতে নিষেধ করা হয়েছে। আমরা অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।  

    প্রসঙ্গত, হাড়মাসড়া গ্রামে শেখ পুকুর নামে একটি বড় জলাশয় সংস্কার করার কথা ছিল। সেইমতো পঞ্চদশ অর্থ কমিশন থেকে জেলা পরিষদের তরফে ১৫ লক্ষ ৪৮ হাজার ১৩১ টাকা বরাদ্দ করা হয়। পুকুর খননের পাশাপাশি সৌন্দর্যায়ন, আলো লাগানো সহ অন্যান্য কাজও হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার ওই জলাশয়ের পরিবর্তে গ্রামেরই খান ডোবা বলে পরিচিত ছোট একটি পুকুর সংস্কার করেছেন। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, খুব বেশি হলে এক-দেড় লক্ষ টাকা খরচ করে ওই ডোবা কাটানো হয়। সেটি কয়েকবছর আগে ১০০ দিনের কাজে সংস্কার হয়েছিল। ফলে সামান্য কাজ করেই দায় সারা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জেলা পরিষদে দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু কাজ বন্ধ রাখার পরিবর্তে বর্তমানে ওই ঠিকাদার ডোবায় স্নানের ঘাট ও অন্যান্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি দ্রুত কাজ শেষ করে ঝামেলা থেকে পরিত্রাণ পেতে চাইছেন বলে বাসিন্দারা মনে করছেন। শেখ পুকুর সংস্কার হলে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকার চাষিরা সেচের জল পেতেন। তা না হওয়ায় কৃষকরা ক্ষুব্ধ। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব এ ব্যাপারে ‘দিদিকে বলো’-য় অভিযোগ জানান। ৪০০ চাষির সই সম্বলিত অভিযোগপত্র তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে জমা দেওয়ারও উদ্যোগ নিয়েছেন।

    প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার বিল্টু ঘোষ বলেন, আমার বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়মের অভিযোগ ভিত্তিহীন। জেলা পরিষদের নির্দেশমতো আমি পুকুর সংস্কারের কাজ করেছি।  হাড়মাসড়া অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি সুজিত চট্টোপাধ্যায় বলেন, জেলা পরিষদকে তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার এখনও খান ডোবায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। অবিলম্বে ডোবার কাজ বন্ধ রেখে শেখ পুকুর সংস্কার শুরু করতে হবে। যে প্রকল্পের নামে অর্থ বরাদ্দ হয়েছে, তা আমরা করিয়েই ছাড়ব। তারজন্য যতদূর যেতে হয় যাব। চাষিদের সঙ্গে বঞ্চনা মেনে নেওয়া হবে না।  এই পুকুর সংস্কারের কাজের বিল আটকে দিল বাঁকুড়া জেলা পরিষদ। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)