• মিলন, তাপসীর বরফ কি গলল? চর্চা চলছেই
    এই সময় | ২৮ জুলাই ২০২৫
  • দিগন্ত মান্না, হলদিয়া

    বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেও এতদিন তাঁকে হলদিয়া শহর তৃণমূলের কোনও প্রকাশ্য কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। এমনকী, হলদিয়া শহর তৃণমূলের একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি মিছিলেও গরহাজির ছিলেন হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডল।

    যা নিয়ে তাপসীকে খোঁচা দিতে ছাড়েনি তৃণমূলেরই একাংশ। রবিবার হলদিয়া শহর তৃণমূলের নানুর শহিদ দিবস কর্মসূচিতে যোগ দেন তাপসী।

    এই প্রথম হলদিয়া শহর তৃণমূলের কোনও প্রকাশ্য কর্মসূচিতে যোগ দিলেন তিনি। তবে কর্মসূচির অতিথি তালিকার একেবারে শেষে তাপসীর নাম থাকা নিয়েও শুরু হয়েছে চর্চা।

    গত মার্চে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন তাপসী। তাঁর তৃণমূলে যোগদান মেনে নিতে পারেননি হলদিয়া শহর তৃণমূলের একাংশ। প্রকাশ্যে আসে দ্বন্দ্ব। নিজের বিধানসভার অন্তর্গত ব্লক এলাকায় তাপসী দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিলেও শহর তৃণমূলের কোনও কর্মসূচিতে তাঁকে এতদিন দেখা যায়নি।

    তবে রবিবারের কর্মসূচিতে তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজিতকুমার রায়, নন্দকুমারের বিধায়ক সুকুমার দে, মহিষাদলের বিধায়ক তিলক চক্রবর্তীর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন তাপসীও।

    হলদিয়া শহর তৃণমূলের সভাপতি মিলন মণ্ডলের সঙ্গে তাপসীর ‘দ্বন্দ্বের’ কথা অজানা নয় হলদিয়ার। ফলে, তাপসীকে নিয়ে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। দলীয় নির্দেশ অমান্য করায় শনিবার শো-কজে়র মুখে পড়েন নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ।

    দলীয় শৃঙ্খলার প্রশ্নে তৃণমূল যে কঠোর হতে পারে তা নন্দীগ্রামের ঘটনা থেকেই স্পষ্ট। নন্দীগ্রামে দলের কড়া মনোভাবের জেরেই কি অবশেষে হলদিয়া শহর তৃণমূলের প্রকাশ্য কর্মসূচিতে যোগ দিলেন তাপসী?

    মিলন বলছেন, ‘তাপসী প্রথমবার শহরের কোনও প্রকাশ্য কর্মসূচিতে যোগ দিলেন। ওঁকে তো আসতেই হবে। তিনি যদি হলদিয়া শহর তৃণমূলের কর্মসূচিতে না আসেন তার দায়িত্ব কি আমাদের?’

    তা হলে আগের কর্মসূচিতে তাপসীকে সে ভাবে দেখা যায়নি কেন? মিলনের কথায়, ‘তিনি তো সবে আমাদের দলে এসেছেন। পতাকা ধরলেই কি তৃণমূল হওয়া যায়?’

    তাপসীর সঙ্গে হলদিয়া শহর তৃণমূলের একাংশের দূরত্ব যে এখনও অটুট তা মিলনের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট। যদিও সুজয়ের বার্তা, ‘কোন্দল নয়। একতা রেখে সবাইকে দল করতে হবে।

    সম্প্রতি আমি মিলন ও তাপসীদি দু’জনের সঙ্গেই কথা বলেছি। দলের নির্দেশ সবাইকেই মানতে হবে। শৃঙ্খলার প্রশ্নে দল কোনও আপস করবে না। দু’জনকেই সে কথা স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছি। আজ তাপসীদি শহর তৃণমূলের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন। টুকটাক যা ভুল বোঝাবুঝি ছিল তা মিটে গিয়েছে।’

    এ প্রসঙ্গে তাপসীর বক্তব্য, ‘দলের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। একদিনে একাধিক কর্মসূচির থাকায় শহরের একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি মিছিলে যোগ দিতে পারিনি।’ তবে নানুর শহিদ দিবসের আমন্ত্রণপত্রের অতিথি তালিকার একেবারে শেষে নাম ছিল তাপসীর। সেটাও কি দ্বন্দ্বের কারণেই? শহর জুড়ে চর্চা চলছেই।

  • Link to this news (এই সময়)