• কোর্ট-নির্দেশ অমান্য, চেষ্টা ট্রাম তুলে দেওয়ার! আন্দোলনে ডাক
    এই সময় | ২৮ জুলাই ২০২৫
  • এই সময়: কুমোরটুলির কাছে রবীন্দ্র সরণিতে স্পিড–ব্রেকার বসানো হয়েছে। অভিযোগ, সেই স্পিড–ব্রেকার বসানো হয়েছে ট্রামলাইনের উপরেই।

    বড়বাজারের কাছে চিৎপুর ও এমজি রোডের ক্রসিংয়ের কাছে কিছু দিন আগে ট্রামলাইনে গভীর রাতে পিচ ঢেলে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। ক্যালকাটা ট্রাম ইউজ়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (সিটিইউএ)–এর তরফে বড়বাজার থানায় ১৯ জুলাই অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

    তার পরেই তড়িঘড়ি পিচ তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু যে সংস্থা পিচ ঢেলেছে তাদের বিরুদ্ধে থানা কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে ট্রাম আন্দোলনকারীদের অভিযোগ।

    কলকাতা হাইকোর্ট স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিল, মহানগরে ট্রামলাইনের উপরে পিচ ঢালা (বিটুমিনাইজ়েশন) যাবে না। যেখানে ট্রামলাইনে পিচ ঢেলে দেওয়া হয়েছে, সেখান থেকে পিচ তুলে ট্রামলাইন আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে।

    কিন্তু সিটিইউএ–সহ কলকাতার ট্রাম আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত সংগঠনগুলির অভিযোগ, হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও মাঝেমাঝেই ট্রামলাইনে পিচ ঢেলে দেওয়া হচ্ছে। কলকাতা পুরসভাই এই কাজ করছে বলেও ট্রামপ্রেমীদের অভিযোগ।

    এই পরিস্থিতিতে আগামী ১ অগস্ট কলকাতা পুরসভার সামনে অবস্থান করতে চলেছেন ট্রামপ্রেমীরা। সিটিইউএ–এর তরফে তমাল নন্দ বলেন, ‘কলকাতা পুরসভার কাছে জানতে চাইব, হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ট্রামলাইন কেন বিটুমিনাইজ়েশন হচ্ছে?

    বড়বাজার থানায় দ্বিতীয় একটি অভিযোগ দায়ের করে আমরা বলেছি, তদন্ত করে দেখতে হবে কোন সংস্থা বিটুমিনাইজ়েশন করেছে? অভিযুক্ত সংস্থার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করতে হবে।’

    কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (পূর্ত) অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘রাস্তার কোথাও খানাখন্দ হলে আমরা সারিয়ে দিই। ট্রামলাইনে আমরা বিটুমিনাইজ়েশন করছি না। তবে ট্রাম কোম্পানি অনেক সময়ে পিচ দেওয়ার কাজ করে। বড়বাজারে সেই রকম কিছু হয়েছি কিনা জানি না।’

    রাজ্যে সরকার যে কলকাতায় ট্রাম চালাতে চায় না, তা পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী একাধিকবার প্রকাশ্যে বলেছেন। স্নেহাশিসের বক্তব্য, ‘এই বিষয়টি এখন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। রাজ্য সরকার ট্রাম চালানোর পক্ষপাতী নয়। তবে পরিবহণ দপ্তরের অধী‍নে থাকা ট্রাম কোম্পানি রাস্তা মেরামতের কাজ করে না।’

    ট্রাম আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, মহানগরের রাস্তায় বিভিন্ন জায়গায় ক্লোজ়ড সার্কিট ক্যামেরা রয়েছে। ফলে বড়বাজারে কারা ট্রামলাইনে পিচ ঢেলেছে, পুলিশের কাছে সেই ফুটেজ থাকা উচিত। হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে কারা ট্রামলাইনে পিচ ঢেলেছে, সেই ফুটেজ দেখে তা চিহ্নিত করা কঠিন কিছু নয়।

    বড়বাজারে ট্রামলাইনে পিচ ঢেলে দেওয়া থেকে রবীন্দ্র সরণিতে ট্র্যাকের উপরে স্পিড ব্রেকার তৈরির ঘটনার পাশাপাশি ২০২৪–এর অগস্ট থেকে টালিগঞ্জ–বালিগঞ্জ রুটের ট্রাম বন্ধ রয়েছে। মুদিয়ালি এলাকায় পানীয় জলের পাইপের কাজ হচ্ছে — এই কারণ দেখিয়ে এই রুটে প্রায় এক বছর ট্রাম চলাচল বন্ধ করে রাখা হয়েছে বলে ট্রাম আন্দোলনকারীদের বক্তব্য।

  • Link to this news (এই সময়)