নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এসআইআর নিয়ে বিহারে বিধানসভা ভোটের আগে উত্তাল দেশের রাজনীতি। নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা। এর মাঝেই বিহারে একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ভোটার তালিকায় এসআইআরের কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। বিহারে চলছে সেই সমীক্ষা। কারা প্রকৃত ভোটার, কাদের নাম তালিকায় থাকবে, তা নির্ধারিত হচ্ছে কমিশন নির্ধারিত ১১টি নথির ভিত্তিতে। ঘটনাচক্রে, এই ১১টি নথির মধ্যে রয়েছে রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেটও।আর সেই ‘রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট’ নিয়েই হয়েছে গণ্ডগোল। বিহারের পাটনায় ‘রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট’ পেয়েছে কুকুর! সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে সার্টিফিকেটটি। যাতে লেখা রয়েছে ‘ডগ বাবু’। রয়েছে কুকুরের ছবি। পিতামাতার নাম লেখা রয়েছে অশ্লীল ভাষায়। ওই সার্টিফিকেটে ঠিকানা হিসেবে লেখা রয়েছে পাটনা জেলার কৌলিচক এলাকার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড। রয়েছে আধিকারিকের সইও। অর্থাৎ জনৈক ‘ডগ বাবু’ ওই এলাকার বাসিন্দা। এমনটাই ‘রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট’ বলে দিচ্ছে। আর এই বিষয়টি সামনে আসতেই নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গোটাটাই চক্রান্ত বলে অভিযোগ তাঁর। সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে চাইছে বিজেপি, এমনটাও বলেন তিনি। আজ, সোমবার দিল্লি যাওয়ার পথে কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অভিষেক বলেন, ‘ভোটার তালিকায় এসআইআরের নামে নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র চলছে। যা পুরোটাই করছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। নির্বাচন কমিশন তল্পিবাহকের মতো কাজ করছে। সংশোধনের নামে আসল মানুষের নাম বাদ দিয়ে কুকুরের নামে শংসাপত্র দেওয়া হচ্ছে। এসব কী চলছে? বাংলাতে প্রত্যেক নির্বাচনেই গোহারা হারছে বিজেপি। তাই বাংলার মানুষদের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে মরিয়া তাঁরা।’ পাশাপাশি অভিষেক আজ, সোমবার বলেন, ‘বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালিদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। হেনস্তা হতে হচ্ছে। বিজেপি যে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে, তার জবাব ওরা ভোটের বাক্সে পাবে। ২০২১ সালের বিধানসভা ও ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে জবাব পেয়েছে বিজেপি। আগামী দিনেও বাংলার মানুষ ওদের জবাব দেবে।’ একই সঙ্গে অনুপ্রবেশ ও পহেলগাঁও হামলা নিয়েও কেন্দ্রে বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তৃণমূল সাংসদ। তিনি বলেন, ‘সীমান্ত দেখার দায়িত্ব বিএসএফের। তাহলে কীভাবে সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ ঘটছে। এটা তো কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর চরম ব্যর্থতা। ওনার অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। পহেলগাঁওতে পাকিস্তান থেকে জঙ্গিরা ঢুকে গেল। কীভাবে ঢুকল ওরা। এখনও পর্যন্ত সেই জঙ্গিদের খোঁজ পাওয়া যায়নি যারা এতগুলো মানুষকে খুন করল।’ পাশাপাশি এদিন অভিষেক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, সংসদে বাংলাতেই এবার থেকে বক্তব্য রাখবেন তিনি। অপারেশন সিন্দুর নিয়ে আলোচনায় বাংলা ভাষাতেই কথা বলবেন তৃণমূল নেতা।