আমি বেঁচে থাকতে এনআরসি করতে দেব না, বোলপুর থেকে হুঙ্কার মমতার
বর্তমান | ২৯ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বোলপুর: বাংলাতে কথা বললেই বাংলাদেশি তকমা দিয়ে দিচ্ছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি। তাই পশ্চিমবঙ্গ থেকে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের কখনও আটক করে হেনস্তা করা হচ্ছে কিংবা ভরা হচ্ছে জেলে। পুলিসের জুলুমও সহ্য করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। দিল্লি, রাজস্থান, ওড়িশা, হরিয়ানা সবকটি বিজেপি শাসিত রাজ্যেই এই ঘটনা ঘটছে। যার বিরুদ্ধে আগেই গর্জে উঠেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাঙালিদের হেনস্তার প্রতিবাদে রাজপথে করেছেন মিছিল। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকেই ডাক দিয়েছিলেন ভাষা আন্দোলনের। যার শুরুটা আজ, সোমবার করলেন বোলপুর থেকেই। বোলপুরের শান্তিনিকেতন হল কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কর্মভূমি। আর সেই বোলপুর থেকেই বাংলা ও বাঙালির অস্মিতাকে রক্ষা করার শপথ নিয়ে বিরাট মিছিল করলেন তৃণমূল নেত্রী। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবিকে সঙ্গে নিয়ে এদিন মিছিলে হাঁটেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় এই কর্মসূচিতে হাজির ছিলেন বীরভূম জেলার নেতৃত্ব, বিধায়ক ও সাংসদরা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, মলয় ঘটক, চন্দ্রনাথ সিনহা।এদিন বেলা ১২টাতে প্রশাসনিক সভা সেরে দুপুরেই বোলপুরের ট্যুরিস্ট লজ মোড় থেকে জাম্বুনি মোড় পর্যন্ত মিছিলে হাঁটেন তৃণমূল নেত্রী। বার্তা একটাই। বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের পাশে রয়েছেন তিনি। মিছিল শেষে জনসভা থেকে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তোপও দাগেন মমতা। তিনি বলেন, ‘রেশন, আধার, প্যান কার্ড থাকা সত্ত্বেও অত্যাচার করা হচ্ছে। পুশব্যাক করা হচ্ছে। আমি কোনও ভাষার বিরোধী নই। আমরা ঐক্য চাই। বাংলায় কথা বললেই হেনস্তা করা হচ্ছে। বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি তকমা দিচ্ছে। স্বাধীনতা যুদ্ধে বাঙালিদের অবদান ভুলে গিয়েছেন।’ এদিন তৃণমূল নেত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এই ভাষা আন্দোলন শুরু হয়েছে কবিগুরুর মাটি থেকে এবার প্রত্যেক জেলায় চলবে। পাশাপাশি এদিন জাতীয় নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন মমতা। এসআইআর করে আদপে বিজেপিরই ফায়দা করতে চাইছে কমিশন। এমনটাই অভিযোগ মমতার।এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বলছি, দেশ ভেঙে যেতে পারে এই অপদার্থ নীতির জন্য। বিরাট গেমপ্ল্যান আছে। নির্বাচন কমিশন সরকারের হয়ে এনআরসির খেলায় নেমেছে। আমি বেঁচে থাকতে এখানে এনআরসি করতে দেব না। কোনও ডিটেনশন ক্যাম্প হতে দেব না। একটা মানুষের ঠিকানা কেড়ে নেওয়া হলে তোমাদের ঠিকানাও থাকবে না। বিভিন্ন রাজ্যে ডাবল ইঞ্জিন সরকার গড়তে সাহায্য করছে কমিশন।’ সঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে হুঙ্কার ছেড়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘২০২৯ পর্যন্ত এই সরকার টিকবে না। তখন কী হবে? এইভাবে চলতে থাকলে শূন্য থেকে একদিন মহাশূন্যে পৌঁছে যাবে বিজেপি।’