• এসআইআর: ৩০ বছর আগের ভোটার লিস্ট জোগাড়ে তোড়জোড়
    বর্তমান | ২৯ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশনে (এসআইআর) লক্ষ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ যাওয়ার সম্ভাবনা বিহারে। বাংলাতেও সেই কায়দায় নাম কাটার আশঙ্কা ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকের মনে। সঙ্গে এনআরসি জিগির! এনিয়ে ভোটারদের একাংশ রীতিমতো আতঙ্কিত। তাঁরা এখন নিজেদের নথি জোগাড় করে রাখছেন। এজন্য কেউ ২৫-৩০ বছর আগের ভোটার তালিকা, আবার কেউ পুরসভা ও পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট সংগ্রহ করছেন। এমন আবহে তৃণমূল ও বিজেপির বাকযুদ্ধ চরমে। 

    বছর ঘুরতেই বাংলায় বিধানসভা ভোট। বিহারের মতো পশ্চিমবঙ্গেও এসআইআর হবে বলেই আশঙ্কা। ইতিমধ্যে শিলিগুড়িতে এসে বিহার মডেলে ভোটার তালিকা থেকে ‘ভুয়ো’ নাম কাটার কথা জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমিক ভট্টাচার্য। এমন প্রেক্ষাপটে অসম সরকার কোচবিহারের তিন বাসিন্দাকে এনআরসির নোটিস ধরানোয় উদ্বেগ বেড়েছে। বক্সিরহাট থেকে বিহার সীমানা সংলগ্ন শিলিগুড়ি, ইসলামপুর, মালদহের বাসিন্দাদের একাংশ নথি জোগাড়ে ঝাঁপিয়েছেন। 

    সোমবার শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডে একটি সাইবার কাফেতে পুরনো ভোটার তালিকার খোঁজে জড়ো হন কয়েকজন ভোটার। মহাকালপল্লির ব্যবসায়ী দীপক দাস বলেন, ২০ টাকা দিয়ে ২০০২ সালের তালিকা বের করলাম। শুধু কাফে নয়, কাউন্সিলারদের বাড়িতেও রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট, ডমিসাইল সার্টিফিকেট, পুরনো ভোটার তালিকার খোঁজে যাচ্ছেন নাগরিকরা। 

    সংহতি মোড়ে ওয়ার্ড অফিসে বসে শিলিগুড়ি পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের এমআইসি তথা তৃণমূলের ৩ নম্বর টাউন কমিটির সভাপতি দুলাল দত্ত বলেন, একসময় আমার ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে দু’জন থাকতেন। এখন একজন মাটিগাড়া, আর একজন ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে থাকেন। তাঁরা ২৫-৩০ বছর আগের ভোটার তালিকার খোঁজ করছিলেন। 

    শুধু শিলিগুড়ি নয়, আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসেছে কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারেও। খাগড়াবাড়িতেও একটি কাফে থেকে ১০ টাকার বিনিময়ে ২০০২ সালের ভোটার তালিকা বের করে রাখছেন বাসিন্দারা। অনেকে উদ্বাস্তু কলোনির পুরনো পাট্টার নথি জোগাড় করতে ভূমিদপ্তরে যাচ্ছেন। কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, প্রতিদিন প্রচুর বাসিন্দা যোগাযোগ করছেন। ১৯৬২ সালের ভোটার তালিকা, জন্ম সার্টিফিকেট কীভাবে জোগাড় করবেন এমন প্রশ্ন করছেন। আমি ’৬২ সালের ভোটার তালিকা জোগাড় করেছি। তা দিয়ে নাগরিকদের সহায়তা করছি। 

    তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য, লাগাতার লড়াই, আন্দোলনে এসব রুখব। যদিও বিজেপির উত্তরবঙ্গের কনভেনর তথা ফলাকাটার বিধায়ক দীপক বর্মন বলেন, এসআইআর নিয়ে তৃণমূল বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এসব করে লাভ হবে না।
  • Link to this news (বর্তমান)