টোল ট্যাক্সের তিন কোটি নিয়ে উধাও, দুই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ জেলা পরিষদের
বর্তমান | ২৯ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: টোল ট্যাক্সের প্রায় তিন কোটি টাকা জমা না করেই ‘উধাও’ হয়ে গিয়েছে খণ্ডঘোষের দুই ঠিকাদার। টাকা জমা করার জন্য পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ তাদের বারবার চিঠি করেছে। তাতে তারা কর্ণপাত করেনি। এবার দুই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ। সোমবার জেলা পরিষদের অর্থ কমিটির বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে ‘অ্যাসেট’ কমিটির বৈঠকেও বিষয়টি আলোচনা হয়েছিল। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বলেন, টাকা জমা করার জন্য বহুবার ওই দুই ঠিকাদারকে বলা হয়েছিল। আশ্বাস দেওয়ার পরও তারা টাকা জমা করেনি। এবার তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আরও কয়েকটি ঠিকাদার সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, খণ্ডঘোষ ব্লকের পলেমপুর থেকে নবগ্রাম পর্যন্ত রাস্তার টোল আদায়ের বরাত পেয়েছিল একটি ঠিকাদার সংস্থা। ঠিকাদারকে টাকা পরিশোধ করার জন্য ১৫দিনের সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় অনেক আগেই পেরিয়ে গিয়েছে। অন্য আরেকটি ঠিকাদার সংস্থাও টোল আদায় করার পর টাকা জমা করেনি। এদিন অর্থ কমিটির বৈঠকে জেলাশাসক আয়েশা রানি এ উপস্থিত ছিলেন। তিনিও ওই দুই সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রয়োজনে এফআইআর করার কথা বলেছেন। এদিন অর্থ কমিটির বৈঠকে আরও কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উল্লাস উপনগরীতে প্রয়োজনীয় অপরিহার্য ফিজ বাড়ছে। প্রদেয় অর্থ ৪০০ থেকে বাড়িয়ে ৫৫০ টাকা করা হচ্ছে। উল্লাসের ন’জন বাসিন্দাকে নিয়ে ওয়েলফেয়ার কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাস্তাঘাট মেরামতি, পানীয় জল সরবরাহ সহ বিভিন্ন জরুরি বিষয়গুলি এই কমিটি দেখভাল করবে। আগের সোসাইটির নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে থাকা টাকা নবগঠিত কমিটির অ্যাকাউন্টে হস্তান্তর করার জন্য বলা হয়েছে। জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষদের একটি করে ল্যাপটপ দেওয়ার সিদ্ধান্তও এদিনের বৈঠকে গৃহীত হয়েছে। কর্মাধ্যক্ষদের দাবি, প্রতিটি বোর্ডে কর্মাধ্যক্ষদের ল্যাপটপ দেওয়া হয়েছে। এই বোর্ড গঠন হওয়ার পর তা দেওয়া হয়নি। জেলা পরিষদ দুঃস্থ পরিবারগুলিকে বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রকৃত উপভোক্তাদের তালিকা তৈরির জন্য কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এদিনের বৈঠকে মেন্টর মহম্মদ ইসমাইল, সহ সভাধিপতি গার্গী নাহা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এক আধিকারিক বলেন, জেলা পরিষদের প্রতিটি কাজে স্বচ্ছতা আনতে জোর দেওয়া হয়েছে। কোনও ঠিকাদার নিয়ম মেনে কাজ না করলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। কালো তালিকাভুক্ত করার পাশাপাশি তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বেশ কয়েকটি রাস্তা সংস্কারের কয়েক মাস পরেই বেহাল হয়ে গিয়েছে। কী কারণে এত দ্রুত রাস্তা খানাখন্দে ভরে গিয়েছে, সেটাও আধিকারিকরা খতিয়ে দেখবেন।