• মোদির সভার ১০ দিন পরও হাল ফেরেনি নেহরু স্টেডিয়ামের, ফুঁসছেন দুর্গাপুরবাসী
    বর্তমান | ২৯ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, দুর্গাপুর: সেইল-মোহনবাগান অ্যাকাডেমি গড়ে উঠেছিল দুর্গাপুরেই। মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলের মতো বাংলার একাধিক খ্যাতনামা দলের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচের সাক্ষী স্টিলসিটি। দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম আধুনিক এই শহরে সংস্কৃতির পাশাপাশি ক্রীড়াপ্রেমীদের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। ক্রীড়াপ্রেমীদের দাবি মেনেই দুর্গাপুর পুরসভা সিধু-কানু ইন্ডোর স্টেডিয়ামকে নতুন রূপে সাজিয়ে তুলেছে। আর ভগৎ সিং স্টেডিয়ামের শ্রীবৃদ্ধি করেছে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ। শুধু ক্রিকেট বা ফুটবল নয়, দুর্গাপুরে দাবা, টেবিল টেনিস, বাস্কেট বল সহ বিভিন্ন খেলার খেলোয়াড় ও ক্রীড়াপ্রেমীর সংখ্যা বাড়ছে।

    এহেন আধুনিক শহরে এক রাজনৈতিক দলের সভার জন্য আস্ত মাঠ ধ্বংস হয়ে গেল। অশনি সংকেতে আতঙ্কিত ক্রীড়াপ্রেমীরা। তাঁদের আশঙ্কা অমূলক নয়। দুর্গাপুরের নেহরু স্টেডিয়ামে ১৮ জুলাই রাজনৈতিক সভা করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিজেপির সেই সভা হওয়ার ১০দিন পরও বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে সেইলের এক সময়ের সেরা এই ক্রীড়াঙ্গন। এদিন মাঠে গিয়ে দেখা গিয়েছে, কোথাও কোনও মানুষ নেই। মাঠ দখল করেছে ‘গো-মাতা’রা। মাঠের মধ্যে যত্রতত্র আবর্জনা পড়ে রয়েছে। কাদায় পরিপূর্ণ মাঠ। মাঠের যে অংশে মঞ্চ হয়েছিল, সেখানে ইট বিছানো হয়েছিল। সেই ইট এখনও মাঝমাঠে পড়ে রয়েছে। মাঠে রয়েছে একাধিক বড় গর্ত। কোথাও সংস্কারের লেশমাত্র নেই।

    তবে, এমনটা তো হওয়ার কথা ছিল না। সভার পরের দিনই মাঠ নষ্ট করার অভিযোগে নেহরু স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছিল তৃণমূল। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী মাঠে ধানগাছ পুঁতে প্রতীকী প্রতিবাদ করেছিলেন। হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, মাঠ সংস্কার না হলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে। সেদিন বিজেপিও মাঠ থেকেই গলা উঁচিয়ে জানিয়েছিল, তারা দায়িত্ব নিয়ে মাঠ সংস্কার করে দেবে। ডিএসপির পক্ষ থেকেও মাঠ আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, ১০দিন পার হয়ে গেলেও মাঠের হাল ফেরেনি। শুধুমাত্র নরেন্দ্র মোদির সভাস্থলের হ্যাঙার খোলা হয়েছে। ডেকরেটরের লোক বাঁশের কাঠামো খুলে পুজো মণ্ডপে নিয়ে গিয়েছে। সভার পরের দিন থেকে কার্যত জরাজীর্ণ অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে এই মাঠ।

    এবিষয়ে প্রশ্ন উঠতেই বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই বলেন, মাঠ সংস্কার নিয়ে ভাবতে হবে না। মাঠ সংস্কার করার দায়িত্ব নিয়েছে গেইল। আধ ঘণ্টার বৃষ্টি হলে দুর্গাপুরের মানুষকে নৌকা নিয়ে বের হতে হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস সরকার আগে তার জবাব দিক। মাঠের ভাবনা আমরা বুঝে নেব। ডিএসপির মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বেদবন্ধু রায় বলেন, গেইল মাঠ সংস্কার করছে। যে সীমানা প্রাচীরগুলি ভাঙা হয়েছিল, তা নির্মাণ করা শুরু হয়েছে। বৃষ্টি কমলেই মাঠ সংস্কারের কাজ শুরু হবে।এখন প্রশ্ন উঠছে, গেইল কেন বিজেপির রাজনৈতিক সভাস্থল সংস্কার করবে? তারজন্যই কি প্রধানমন্ত্রীর প্রশাসনিক কর্মসূচি ও রাজনৈতিক সভা পাশাপাশি করা হয়েছে? তার থেকেও বড় প্রশ্ন, কবে হাল ফিরবে মাঠের? পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, বিজেপির প্রতিশ্রুতি মানেই জুমলা। দুর্গাপুরের ক্রীড়া পরিকাঠামো উন্নয়নে বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকার কিছু করেনি। উল্টে তারা একটি মাঠ নষ্ট করেছে।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)