রেশন দোকানে অনিয়ম, চার ডিলারকে ২৯ লক্ষ টাকা জরিমানা
বর্তমান | ২৯ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: গোডাউনে মজুত রেশন সামগ্রীর সঙ্গে রেজিস্টারে স্টক লিস্টের কোনও মিল নেই। কারও ঘাটতি ১০০ কুইন্টাল, আবার কারও ঘাটতির পরিমাণ ৬০০কুইন্টাল। হিসেবের এই গরমিলের কারণে পাঁশকুড়া ও কোলাঘাটের চার রেশন ডিলারকে ২৯ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে খাদ্যদপ্তর। কোলাঘাটের ডিলার সুকুমার পাল ও কমলকৃষ্ণ বাগ এবং পাঁশকুড়ার প্রমীলা বেরা ও মতলেব খানকে জরিমানা করা হয়েছে। স্টক মিলিয়ে দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হলেও সেটা করতে না পারায় তাঁদের জরিমানার মুখে পড়তে হয়েছে।
কোলাঘাট থানার কোলা গ্রামের রেশন ডিলার সুকুমার পাল প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার রেশনসামগ্রী কারচুপিতে অভিযুক্ত। তাঁর রেশন দোকানে ৬০০কুইন্টাল রেশনের চাল ও ৭০কুইন্টাল আটার হদিশ নেই। ওই রেশন ডিলারকে প্রথমে মহকুমা খাদ্য নিয়ামক শ্যামাপ্রসাদ ভট্টাচার্য ৩২লক্ষ টাকা ফাইন করেছিলেন। অভিযুক্ত ডিলার ওই শাস্তি পুনর্বিবেচনার জন্য জেলা খাদ্য নিয়ামকের দ্বারস্থ হন। সেখানে জরিমানার অঙ্ক কমে ২০লক্ষে দাঁড়িয়েছে।
পাঁশকুড়া শহরের রেশন ডিলার মতলেব খানকে তিন লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। দুয়ারে রেশন সামগ্রী বিলির নামে অন্যের বাড়িতে তিনি রেশন সামগ্রী মজুত করে রেখেছিলেন। কোনও ডিলার নিজের গোডাউন ছাড়া অন্যত্র রেশন সামগ্রী মজুত করে রাখতে পারেন না। ভিজিটে এই ঘটনা ধরা পড়ার পর তাঁকে শোকজ করা হয়। সেই শোকজের জবাবে অসন্তুষ্ট মহকুমা খাদ্য নিয়ামক। তাঁকে তিন লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
কোলাঘাটের আর এক রেশন ডিলার কমলকৃষ্ণ বাগের গোডাউনেও মজুত রেশন সামগ্রীর হিসেবে গরমিল থাকায় প্রথমে শোকজ করা হয়। তারপর ৫ লক্ষ ৩০হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পাঁশকুড়া থানার মাইসোরা পঞ্চায়েতের ফকিরবাজারে এক পরিবারের দু’টি অন্তোদ্বয় অন্নপূর্ণা যোজনার রেশন কার্ড থাকলেও একটিতে রেশন সামগ্রী দেওয়া হতো। অপরটিতে দেওয়া হতো না। কার্ডের সঙ্গে মোবাইল নম্বর সংযোগের পর বিষয়টি জানাজানি হয়। তারপর গত ১৮ফেব্রুয়ারি ওই দোকানে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। সেখানকার ডিলার প্রমীলা বেরাকে ৩০হাজার টাকা ফাইন করা হয়েছে।
তমলুক মহকুমার খাদ্য নিয়ামক শ্যামাপ্রসাদ ভট্টাচার্য বলেন, খাতার সঙ্গে গোডাউনে মজুত সামগ্রীর হিসেবে গরমিল থাকছে। এরকম বেশ কয়েকটি ঘটনা আমাদের নজরে আসার পর জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। এছাড়া, রেশন সামগ্রী নিজের গোডাউনেই রাখার নিয়ম। দুয়ারে রেশন ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর কেউ কেউ সেই সামগ্রী অন্যত্র রাখছেন। এতে নিয়ম ভাঙা হচ্ছে। এধরনের ঘটনাতেও শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।