• চোলাইয়ের বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে তৎপর রাজ্য, জেলায় মদ বিক্রিতে দিনে পাঁচ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকার টার্গেট
    বর্তমান | ২৯ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: চোলাইয়ের দাপট রুখে পূর্ব মেদিনীপুর জেলাকে প্রতিদিন ৫ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা মদ বিক্রির টার্গেট দিল রাজ্য। ২০২৫-’২৬ আর্থিক বছরে মোট ১৯৬০ কোটি টাকার মদ বিক্রির কোটা বেঁধে দিয়েছে আবগারি দপ্তর। গত ১ এপ্রিল থেকে এখনও পর্যন্ত ৫৫০ কোটি টাকার মদ বিক্রি হয়েছে। আগামী বছর ৩১ মার্চের মধ্যে মোট ১৯৬০ কোটির কোটা পূরণ করতে হবে। গোটা রাজ্যের মধ্যে এই জেলার মতো এত বেশি টার্গেট অন্য কোনও জেলাকে দেওয়া হয়নি। কোটা পূরণ করতে ইতিমধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েছে জেলা আবগারি দপ্তর। গত এপ্রিল থেকে এখনও পর্যন্ত দীঘায় ব্যাপক মদ বিক্রি হচ্ছে। গত বছর বিয়ারের দাম অনেকটাই বেড়ে যাওয়ায় বিক্রি কিছুটা কমেছে। সেই জায়গায় সুরাপায়ীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে ফরেন লিকার। তার বিক্রি হু হু করে বাড়ছে। পাশাপাশি দেশি মদের চাহিদাও বিস্তর। দীঘার উপর ভিত্তি করেই এই মুহূর্তে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় রোজ সাড়ে চার কোটি টাকার মদ বিক্রি হচ্ছে। গত বছর এই জেলাকে ১৯৪০ কোটি টাকার মদ বিক্রির টার্গেট দেওয়া হয়েছিল। যদিও বিক্রির পরিমাণ ছিল ১৭৪০ কোটি টাকা। এবছর সেই টার্গেট আরও বাড়িয়ে ১৯৬০ কোটি টাকা করা হয়েছে। প্রতি তিন মাসের একটা টার্গেট লিস্ট বানিয়ে নিচ্ছেন জেলা আবগারি দপ্তরের অফিসাররা। এই মুহূর্তে মোট ২৯১টি দোকান রয়েছে। জুনপুট কোস্টাল এবং দীঘা থানা এলাকায় নতুন করে চারটি দোকান খুলেছে। দোকান প্রতি একটা টার্গেট বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকানে বিক্রি বাড়াতে চোলাই উৎপাদন ও সাপ্লাইয়ের জায়গায় আঘাত হানছে আবগারি দপ্তর। ধারাবাহিকাভাবে এই প্রচেষ্টায় বেশ সাফল্যও এসেছে। গত ১ এপ্রিল থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুরে চোলাই উৎপাদন ও সাপ্লাইয়ের অভিযোগে মোট ৬৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও ২৭টি বাইক, ন’টি সাইকেল, একটি টোটো বাজেয়াপ্ত হয়েছে। ছয় হাজার ৪০২ লিটার চোলা‌ই বা঩জেয়াপ্ত হয়েছে। এছাড়াও চোলাই তৈরির প্রচুর কাঁচামাল বাজেয়াপ্ত করেছে আবগারি দপ্তর। সব মিলিয়ে প্রায় ৯৭ লক্ষ ১৩ হাজার টাকা মূল্যের সামগ্রী বাজেয়াপ্ত হয়েছে বলে আবগারি দপ্তরের জেলা সুপার মণীশ শর্মা জানিয়েছেন। চোলাইকে নির্মূল করে সুরাপায়ীদের লাইসেন্সপ্রাপ্ত মদের দোকানমুখী করাই  আবগারি দপ্তরের কাছে চ্যালেঞ্জ। সাধারণত, এপ্রিল থেকে জুলাই মাস অবধি মদের বিক্রি কিছুটা হলেও থিতিয়ে যায়। কারণ, গরম পড়ে যায়। তাছাড়া, উৎসবের মরশুমও শুরু হয় না। বরং পুজোর আগে রোজগার ও সঞ্চয়ের দিকে বেশি ঝোঁক থাকে। যদিও এবার চিরাচরিত সেই হিসেবে কাজ করছে না বলে আবগারি দপ্তরের অফিসারদের বক্তব্য। জেলার পাঁশকুড়া থেকে তমলুক, হলদিয়া থেকে কাঁথিতে দোকানে বিক্রি কিছুটা কমলেও দীঘা সেই ঘাটতি পুষিয়ে দিচ্ছে। গত এপ্রিল থেকে দীঘায় মদ বিক্রি থেকে বিপুল রোজগার হচ্ছে। যে কারণে অফ সিজনেও রোজ সাড়ে চার কোটি টাকার মদ বিক্রি হচ্ছে। পূর্ব মেদিনীপুরের এক্সাইজ সুপার বলেন, আমাদের এবছর ১৯৬০ কোটি টাকার মদ বিক্রির টার্গেট দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ১ এপ্রিল থেকে আমরা সাড়ে ৫০০ কোটি টাকার মদ বিক্রি করেছি।
  • Link to this news (বর্তমান)