• জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে মেয়েকে বিয়ে, আত্মঘাতী বাবা! স্থানীয় ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের
    বর্তমান | ২৯ জুলাই ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বহরমপুর: অপহৃত নাবালিকা মেয়েকে ফিরে পেতে থানার দ্বারস্থ হয়েছিলেন বাবা। তদন্তে নেমে ২৬ দিন পর নাবালিকাকে উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয় পুলিস। গত রবিবার সেই নাবালিকার বিয়ের বয়স সম্পূর্ণ হয়। সাবালিকা হতেই বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল গ্রামের এক যুবকের পরিবারের বিরুদ্ধে। রবিবার দুপুরে কালীতলায় সিঁদুর দান করিয়ে চারহাত এক করে অভিযুক্ত যুবকের পরিবার। মেয়ের বিয়ে মেনে নিতে না পারায় তার এক ঘণ্টার মধ্যে অভিমানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হলেন মেয়ের বাবা। রবিবার বিকেল ৪টে নাগাদ বাড়ি থেকে আড়াইশো মিটার দূরে লিচু বাগান থেকে উদ্ধার হয় তাঁর ঝুলন্ত দেহ। মৃতের নাম হরেন ঘোষ (৩৮)। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শক্তিপুর থানার রামনগর ঘোষপাড়ায়। মৃতের স্ত্রী পম্পা ঘোষ এগারো জনের বিরুদ্ধে মেয়েকে বাড়ি থেকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন। শক্তিপুর থানার পুলিস জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। মেয়ের উপর অভিমান করেই হরেনবাবু আত্মঘাতী হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।

    স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, হরেনবাবুর একাদশ শ্রেণির পাঠরতা মেয়ে প্রতিবেশী যুবক সমিত ঘোষের সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। গত ২৭ জুন সমিত ঘোষ একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে ফুঁসলিয়ে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যায়। হরেনবাবু শক্তিপুর থানায় অপহরণের মামলা দায়ের করেন। তদন্তে নেমে পুলিস ছাব্বিশ দিন পর ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করে তার বাবার কাছে ফিরিয়ে দেয়।

    হিসেব অনুযায়ী রবিবারই মেয়েটি সাবালিকা হয়। সেদিনই সমিত ঘোষ ও তার পরিবারের লোকজন দলবল নিয়ে হরেনবাবুর বাড়িতে চড়াও হয়ে তাঁর মেয়েকে বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। মৃতের ভাই তন্ময় ঘোষ বলেন, ওরা গ্রামে ক্ষমতাশালী হিসেবে পরিচিত। তাই আমরা প্রতিরোধ করতে পারিনি। 

    বিকেল তিনটে নাগাদ গ্রামের কালীমন্দিরে সিঁদুরদান সেরে সমিতের পরিবার উৎসবে মেতে ওঠে। এদিকে হরেনবাবুকে দেখতে না পাওয়ায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন তাঁর পরিবারের লোক। বিকেল ৪টে নাগাদ হরেনবাবুর দেহ লিচুগাছে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় শক্তিপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। হরেনবাবুর স্ত্রী পম্পা ঘোষ সমিত সহ এগারো জনের নামে শক্তিপুর থানায় মেয়েকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। পম্পা ঘোষ বলেন, মেয়ে যেদিন ফিরে এসেছে সেদিন থেকেই ওরা আমাদের শাসাত। দেখে নেওয়ার হুমকি দিত। আমরা ভয়ে বাড়ি থেকে বেরতে পারতাম না। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি চাই।
  • Link to this news (বর্তমান)