জনভিত্তিই হাতিয়ার, বিধানসভায় বাড়তি সাফল্য দেখছে শাসক দল
বর্তমান | ২৯ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: পাণ্ডুয়া থেকে কোন্নগর, বলাগড় থেকে মহানাদ, একের পর এক সমবায়ে জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। গত একমাসে যেখানেই সমবায় নির্বাচন হয়েছে, সেখানেই ফুটেছে ঘাসফুল। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে যা রাজ্যের শাসকদলের হুগলি-শ্রীরামপুর জেলা নেতৃত্বের মনোবলকে বাড়তি অক্সিজেন জুগিয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, বিধানসভা নির্বাচনের মহড়া হিসেবেই সমবায়ের নির্বাচনগুলিকে ধরা হয়েছিল। সেই নিরিখে ফলও মিলেছে হাতেনাতে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, গ্রামীণ এলাকায় এই বাড়তি জনভিত্তির সুবিধা বিধানসভা ভোটে পাবে তৃণমূল।
যদিও এই অঙ্ক মানতে নারাজ বিরোধীরা। বিজেপি থেকে বাম, সকলেরই দাবি, সমবায় নির্বাচন হল স্থানীয় নির্বাচন। যেখানে রাজ্য রাজনীতির কোনও ইস্যু কাজ করে না। তেমনই দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা যায় না। ফলে, কয়েকটি সমবায়ের দখল নিলেই স্থানীয় ভোটব্যাঙ্কের উপরে নিয়ন্ত্রণ তৈরি হয় না। যদিও ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, বাম আমল থেকেই কৃষিভিত্তিক হুগলিতে সমবায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। সমবায়ের নিরঙ্কুশ দখলদারির সুযোগ একের পর এক বিধানসভা নির্বাচনে বামেরা পেয়েছে। এখনও হুগলির কৃষিবলয়ে সমবায় দখলে থাকলে নির্বাচনী ময়দানে রাজনৈতিক দলগুলি বাড়তি সুবিধা পায়। হুগলি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান তথা ধনেখালির বিধায়ক অসীমা পাত্র বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৃষক কল্যাণের নীতি হুগলির কৃষিজীবী মানুষকে তৃণমূল সরকারের প্রতি সহানুভূতিশীল ও দায়বদ্ধ করেছে। নির্বাচনী ফলাফল সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। পাশাপাশি, হুগলি গ্রামীণে আমাদের জনভিত্তি আগের মতোই মজবুত রয়েছে। বিরোধীরা রাজনৈতিক কারণেই সেই সত্য অস্বীকার করছেন। গত কয়েক মাসে পাণ্ডুয়ায় সবচেয়ে বেশি সমবায়ে নির্বাচন হয়েছে এবং সবগুলিই তৃণমূলের দখলে গিয়েছে। সেখানকার প্রাক্তন বিধায়ক তথা সিপিএম নেতা আমজাদ হোসেন বলেন, মানুষের মনোভাব সমবায় নির্বাচনের প্রেক্ষিতে বিচার করা যায় না। ওই ফলাফল দিয়ে বিধানসভা ভোটে বামেদের ব্যর্থতা বা তৃণমূলের সাফল্য যাচাই করা যায় না। পাণ্ডুয়ায় কোনও সমবায়ের দখল না পেলেও কিছু আসন জিতেছে বিজেপি। তাতে গেরুয়া বাহিনীর স্থানীয় নেতৃত্ব নিজেদের জনসমর্থন বৃদ্ধির দাবি করেছেন। যদিও দলের রাজ্য নেতা স্বপন পাল বলেন, সমবায় ভোটের সঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের কোনও যোগ নেই। আমরা ওই ফলাফলকে নির্ণায়ক ধরতে রাজি নই।
কয়েক মাসে হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলায় একের পর এক সমবায় নির্বাচন হয়েছে। তাতে বিপুল জনসমর্থন পেয়েছে তৃণমূল। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আরও একটি ঘটনা দেখা গিয়েছে। যেখানে বামেরা সামান্য সাফল্য পেয়েছে, সেখানে গেরুয়া পার্টির অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে। আবার বামেদের ভোট কমলে বেড়েছে বিজেপির ভোট। ওই সমীকরণও বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে রাজনৈতিক মহলের চর্চায় থাকছে।