• ‘তাঁরই মতো দৃপ্ত ও প্রতিবাদী তেজে পথ চলুক’, বাঙালি অস্মিতা রক্ষায় বিদ্যাসাগর স্মরণ মমতার
    প্রতিদিন | ২৯ জুলাই ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাঙালির নবজাগরণ যাঁর হাত ধরে শুরু, আজ ফের বাঙালির অস্মিতা রক্ষায় সেই প্রাণপুরুষ পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরেরই শরণাপন্ন হওয়ার সময়। আজ, তাঁর প্রয়াণ দিবসে সোশাল মিডিয়ায় দীর্ঘ পোস্টে বিদ্যাসাগর স্মরণ করে সেই বার্তা দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর প্রার্থনা, ‘তাঁর শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বাঙালি যেন তাঁরই মতো দৃপ্ত ও প্রতিবাদী তেজে পথ চলতে পারে।’ উল্লেখ করলেন বছর ছয়েক আগে কলকাতার বুকে তাঁর মূর্তি ভাঙার মতো লজ্জাজনক ঘটনার কথাও।

    ২৯ জুলাই পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়াণ দিবস। বাংলার শিক্ষাপ্রেমী মানুষজনের কাছে এই দিনটা নিঃসন্দেহে শোকের। কিন্তু তাঁর মতো মনীষীর দেহাবসান হলেও প্রাণপ্রদীপ তো চিরজাগরুক। অন্ধকার সময়ে যা গোটা জাতির কাছে পথপ্রদর্শক। আজ তেমনই এক আঁধারঘেরা সময়ের মধ্যে দিয়ে চলেছে বাংলা ও বাঙালি। ভিনরাজ্যে ভাষা সন্ত্রাসের ‘শিকার’ বাংলাভাষী মানুষজন। তার প্রতিবাদে হাতিয়ার বাংলার শত শত বছরের প্রাচীন সংস্কৃতিই। যার অন্যতম পথিকৃৎ বিদ্যাসাগর। নারীশিক্ষা থেকে শুরু করে একাধিক সমাজসংস্কারমূলক কাজের ভিত্তিস্থাপন তাঁরই হাত ধরে। আজ তাই সেই বিদ্যাসাগরের পথই বাংলা সংস্কৃতি, ভাষা রক্ষার লড়াইয়ে নামার উদ্দীপনা। এনিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

    পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘বাংলার নবজাগরণের প্রাণপুরুষ পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রয়াণ দিবসে জানাই আমার বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি। বিদ্যাসাগর আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের গর্ব। বাংলা তথা ভারতে শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর অবদান এবং নারীর অবস্থার উন্নতির জন্য তাঁর লড়াই আমরা কখনো ভুলতে পারব না। আমরা আজ যা, তা অনেকটাই তাঁর অবদান ? সেই বর্ণপরিচয় থেকে যার শুরু।
    আজ যখন দেশজুড়ে বিজেপির নেতৃত্বে বাংলা ভাষা ও বাঙালির ওপর আক্রমণ শুরু হয়েছে, তখন এই মহামনীষীর জীবন, শিক্ষা ও দর্শন আরো বেশি করে প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। যারা আজ বাংলা ও বাঙালিকে আক্রমণ করছে তারাই বিদ্যাসাগরের দ্বিশতবর্ষে কলকাতায় বিদ্যাসাগর কলেজে তাঁর মূর্তি ভেঙেছিল। আমরা সেই মূর্তি পুনঃস্থাপন করেছি। তাঁর দ্বিশতবর্ষ সারা বছর ধরে বাংলা জুড়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করেছি।

    বিদ্যাসাগরের জন্মভূমি বীরসিংহে বীরসিংহ উন্নয়ন পর্ষদ গঠন করে নানাবিধ উন্নয়ন, সংস্কার ও সৌন্দর্যায়ন করা থেকে শুরু করে তাঁর কলকাতার বাদুড়বাগানের বাড়ির মিউজিয়ামটিকে নতুনভাবে করে দেওয়া, বিদ্যাসাগর কলেজকে হেরিটেজ হিসেবে গড়ে তোলা, বিদ্যাসাগর কলেজেই তাঁর নামে একটি আর্কাইভ তৈরি করা, তাঁর প্রতিষ্ঠিত কলকাতার মেট্রোপলিটান ইন্সটিটিউশনকে অনুদান দেওয়া – অনেক কিছুই করা হয়েছে, হচ্ছে ও আগামীদিনেও হবে। তাঁর মৃত্যুদিনে আমি আর একবার এই মহামানবকে আমার প্রণাম জানাই। তাঁর শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বাঙালি যেন তাঁরই মতো দৃপ্ত ও প্রতিবাদী তেজে পথ চলতে পারে, এই প্রার্থনা করি।’
  • Link to this news (প্রতিদিন)