‘কে সত্যি, কে মিথ্যা প্রমাণ হবে’, শিশুনিগ্রহ কাণ্ডে দিল্লি পুলিশকে চ্যালেঞ্জ মমতার
প্রতিদিন | ৩০ জুলাই ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লিতে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারের মা ও শিশুকে নির্মমভাবে মারধর করেছে পুলিশ! সেই ভিডিও সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অভিযোগ খণ্ডন করে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন দিল্লি পুলিশের ডিএসপি। আজ, মঙ্গলবার বীরভূমের ইলামবাজারের সরকারি কর্মসূচি থেকে পালটা চ্যালেঞ্জ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, “কে সত্যি, কে মিথ্যা প্রমাণ হবে।”
বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলার শ্রমিকদের উপর অত্যাচার, নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। বাংলায় কথা বলার ‘অপরাধে’ তাঁদের বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে! শুধু তাই নয়, বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হচ্ছে বাংলার বহু শ্রমিককে। এই আবহে দিল্লিতে বাংলার এক শ্রমিক পরিবারের মা ও শিশুকে মারধর করার ঘটনা সামনে এসেছে। দিল্লি পুলিশ কোলের শিশুকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই ভিডিও সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে ঘটনার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ করেছিলেন। গতকাল বোলপুরে ভাষা আন্দোলনের মঞ্চ থেকে এই বিষয়ে একই অভিযোগ করেছিলেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর সমাজমাধ্যমে পোস্ট ও পরে বোলপুর থেকে প্রতিবাদে ওই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর তোলপাড় শুরু হয়। জাতীয় রাজনীতিতেও চর্চা চলে। সেই আবহে দিল্লি পুলিশের তরফ থেকে বার্তা দেওয়া হয়। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করেন দিল্লি পুলিশের ডিএসপি(পূর্ব) অভিষেক ধনিয়া। তিনি জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভিডিও পোস্ট করার পরেই তদন্ত শুরু হয়েছিল। ভিডিওর ওই মহিলার পরিচয় জেনে তাঁর বাড়িতে তদন্তকারীরা গিয়েছিলেন। মহিলার অভিযোগ ছিল, ২৬ জুলাই রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ সাদা পোশাকে দিল্লি পুলিশের চার পুলিশকর্মী ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন। তাঁদের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের থেকে ২৫ হাজার টাকা দাবির পাশাপাশি মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। যদিও ওই মহিলার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। সাংবাদিক বৈঠক করে সেই দাবি করেন দিল্লি পুলিশের ডিএসপি।
দিল্লি পুলিশের তরফে দাবি করা হয়, ওই মহিলার মালদহে এক আত্মীয় থাকেন। তিনি একজন রাজনৈতিক কর্মী। তাঁর কথাতেই ওই ভিডিও তৈরি হয়েছিল। পরে সেটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সেই কথা ওই মহিলা জানিয়েছেন। এমনই দাবি করেন দিল্লি পুলিশের আধিকারিক। শুধু তাই নয়, দিল্লি পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে ওই ভিডিও ছড়ানো হয়েছিল বলেও দাবি করা হয়েছে। দিল্লি পুলিশের সেই বক্তব্যের পরই নতুন করে ওই ঘটনা নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়। আজ, মঙ্গলবার বীরভূমের ইলামবাজারে মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচি ছিল। সেই মঞ্চ থেকেই এই ইস্যুতে ফের সোচ্চার হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার দিল্লি পুলিশকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন তিনি।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি কাল ওই বাচ্চাটির কথা বলেছিলাম। একটার পর একটা থানায় ওঁদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আই কালকেই মিটিংয়ে বলেছিলাম। রেকর্ড চেক করুন। বলেছিলাম, ওঁদের থ্রেট করা হবে। সেটাই হয়েছে।” মুখ্যমন্ত্রী এরপর গলা চড়িয়ে বলেন, “আমরা চাইব, তাঁরা যাতে ফিরে আসেন। আর কে সত্যি, কে মিথ্যা তা প্রমাণ হয়ে যাবে।” মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের বক্তব্যে এই ইস্যুতে রাজনৈতিক উত্তাপ আরও বাড়ল। তেমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।