প্রায় ৪ দশক আগে উঠেছিল খুনের চেষ্টার অভিযোগ, দু'জনকে খালাস দিল হাইকোর্ট
হিন্দুস্তান টাইমস | ৩০ জুলাই ২০২৫
প্রায় ৪ দশক আগের একটি মামলায় অবশেষে খালাস পেলেন দুই ব্যক্তি। মেদিনীপুরের একটি পুরনো মামলায় খুনের চেষ্টার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন তাঁরা। তবে কলকাতা হাইকোর্ট সম্প্রতি রায় দিয়েছে, এই দু'জনের বিরুদ্ধে আলাদা উদ্দেশ্যে কাজ করার কোনও নির্ভরযোগ্য প্রমাণ নেই। তাই আইনত তাঁদের সাজা দেওয়া যায় না।
ঘটনার সূত্রপাত ১৯৮৬ সালের ২৫শে অক্টোবর। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এক গ্রামে কৃষিজমি নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে দীর্ঘদিনের পারিবারিক বিবাদ চরমে ওঠে। অভিযোগ, সেই বিবাদের জেরে নেতাই বেরা নামে এক ব্যক্তির উপর হামলা চালানো হয়। ঘটনার পর চারজনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়। যার মধ্যে দু’জন ছিলেন বেরা পরিবারের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক শোভন খা ও দুখা চলক। ১৯৮৮ সালে মেদিনীপুরের একটি দায়রা আদালত অভিযুক্ত চারজনকেই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে। চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়। তবে সময়ের সঙ্গে অভিযুক্তদের মধ্যে গৌর বেরা ও জগাই বেরা নামে দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে রায় বহাল থাকে। অন্যদিকে বাকি দুই শ্রমিক, শোভন ও দুখা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।
বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের বেঞ্চ পর্যবেক্ষণ করে, তদন্তে একাধিক গাফিলতি রয়েছে। ঘটনার পর প্রায় দুই মাস পর্যন্ত কোনও প্রত্যক্ষদর্শীকে জেরা করা হয়নি। কেন এই বিলম্ব, তার ব্যাখ্যাও তদন্তে নেই। প্রতিবেশীদের কেউ সাক্ষ্য দেননি। এমনকি যাঁকে আক্রমণ করা হয়েছিল, সেই নেতাই বেরাও চিকিৎসকের কাছে তাঁর হামলাকারীদের নাম বলেননি। মেডিকেল রিপোর্টে কোথাও স্পষ্টভাবে উল্লেখ নেই যে আঘাতগুলি আক্রমণের ফল, নাকি দুর্ঘটনাবশত পড়ে গিয়ে সেগুলি হয়েছে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ ছিল ৩৪ ধারার প্রয়োগ নিয়ে। আদালত জানিয়েছে, কেবলমাত্র ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা বা অন্য কারও নির্দেশ মানার ভিত্তিতে একই উদ্দেশ্যে কাজ করার প্রমাণ মেলে না। অভিযুক্ত দুই শ্রমিকের বিরুদ্ধে পূর্ব পরিকল্পনার কোনও বিশ্বাসযোগ্য তথ্য আদালতের কাছে নেই।এই সব যুক্তির ভিত্তিতে কলকাতা হাইকোর্ট ওই দুই অভিযুক্তকে খালাস দেয়। বিচারপতি জানিয়ে দেন, অন্য কোনও মামলায় তাঁদের গ্রেফতারি নির্দেশ না থাকলে তাঁদের জামিন বন্ড থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হবে।