গঙ্গা ভাঙন রোধে ডিসেম্বরেই শুরু হবে কাজ, DPR জমা দিতে বলল ফ্লাড কন্ট্রোল কমিশন
হিন্দুস্তান টাইমস | ৩০ জুলাই ২০২৫
গঙ্গার পাড় ভাঙন রোধে অবশেষে পদক্ষেপ নিতে চলেছে কেন্দ্রীয় ‘গঙ্গা ফ্লাড কন্ট্রোল কমিশন’। আসন্ন ডিসেম্বর মাস থেকেই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। সেই লক্ষ্যেই পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও ঝাড়খণ্ড এই তিন রাজ্যকে নিয়ে সম্প্রতি পাটনায় আয়োজিত আন্তঃরাজ্য বৈঠকে গৃহীত হয়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত।
গঙ্গার ভাঙন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সরব ছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সক্রিয় হস্তক্ষেপে কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের উপর চাপ বাড়ে বৈঠকের আয়োজন ও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার জন্য। শেষমেশ ২৪ জুলাই পাটনায় তিন রাজ্যের প্রতিনিধিদের নিয়ে আয়োজিত হয় সেই গুরুত্বপূর্ণ সমন্বয় বৈঠক। পশ্চিমবঙ্গের তরফে উপস্থিত ছিলেন সেচ দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। এই বৈঠকে ঠিক হয়, পশ্চিমবঙ্গে গঙ্গার পাড় ভাঙন রোধে ১৬৩.৫ কিলোমিটার নদীপাড় জুড়ে গড়ে তোলা হবে শক্তিশালী পরিকাঠামো ও আধুনিক বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। বিহারে প্রাথমিক পর্যায়ে কাজ হবে ১৫ কিলোমিটার নদীপাড়ে। ঝাড়খণ্ডেও কিছু অংশে হবে।
কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শুরু করতেই হবে। তাই ৪৫ দিনের মধ্যে বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট প্রস্তুত করতে হবে তিন রাজ্যকেই। বিশেষ করে মালদার রতুয়া অঞ্চলের জন্য আলাদা ডিপিআর আগামী সাত দিনের মধ্যেই জমা দিতে বলা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গকে। এই এলাকাটিকে অগ্রাধিকার দিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। কারণ প্রতি বছর এখানে নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বহু পরিবার।
এছাড়া আন্তঃরাজ্য সীমান্তবর্তী সাকরিগালি চ্যানেলে ১৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ড্রেজিংয়ের কাজ দ্রুত শুরু করতে বিহার ও ঝাড়খণ্ডকে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ড্রেজিংয়ের সমস্ত খরচ বহন করবে পশ্চিমবঙ্গ। কারণ এই অংশে কাজ না হলে রাজ্যের নদীবাঁধ রক্ষা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
গঙ্গা ফ্লাড কন্ট্রোল কমিশনের পরবর্তী বৈঠক হবে আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে। তার আগেই পশ্চিমবঙ্গের অংশে যে মডেলে কাজ হবে, তার বিস্তারিত পরিকল্পনা অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া ও সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা একাধিকবার কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভাঙন রোধের দাবি জানিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে সক্রিয় হয়ে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়।