নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: পকসো মামলায় অভিযুক্ত এক বিচারাধীন বন্দি জেলে আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনায় আলোড়ন ছড়িয়েছে। জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল জেলে বন্দি ছিলেন ৭০ বছরের ওই বৃদ্ধ। জেলের হাসপাতালের বাথরুমে গলায় গামছার ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের মর্গে মৃতের ময়নাতদন্ত হয়। নাতনির বয়ানের ভিত্তিতে সম্প্রতি ওই বৃদ্ধের বিরুদ্ধে জলপাইগুড়ি মহিলা থানায় পকসো আইনে মামলা রুজু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। পরিবার সূত্রে খবর, কয়েকদিন আগে মামলার শুনানির তারিখ থাকলেও ওই বৃদ্ধ অসুস্থ থাকায় তাকে জেল থেকে আদালতে পেশ করা যায়নি। আজ, বুধবার ৩০ জুলাই ফের মামলার শুনানির দিন ধার্য হয়েছিল। তার আগেই জেলে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এক্ষেত্রে জেলে নজরদারি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মৃতের পরিজনরা। যদিও এ ব্যাপারে জেল কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করতে নারাজ। পুলিস সুপার খণ্ডবাহালে উমেশ গণপত বলেন, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে পুলিস।
সম্প্রতি জলপাইগুড়ি মেডিক্যালে মায়ের সঙ্গে পেটে ব্যথা নিয়ে চিকিৎসা করাতে এসে হাসপাতালের বাথরুমে সন্তান প্রসব করেন অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী। এই ঘটনায় হাসপাতালের তরফে পুলিসকে খবর দেওয়া হয়। এরপরই জলপাইগুড়ি মহিলা থানায় পকসো আইনে মামলা রুজু হয়। ওই ছাত্রীর বয়ানের ভিত্তিতে পুলিস তার দাদুকে গ্রেপ্তার করে।
পরিবারের একাংশের দাবি, ঘটনার পিছনে অন্য কেউ দায়ী থাকতে পারে। ওই নাবালিকাকে হয়তো ভয় দেখিয়ে তার দাদুর নাম বলতে বাধ্য করা হয়েছে। ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট এলে সবটা স্পষ্ট হয়ে যেত। ডিএনএ টেস্টের জন্য নমুনা গেলে এখনও রিপোর্ট এসে পৌঁছয়নি। তবে এ ধরনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যেতে হওয়ায় ওই বৃদ্ধ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন বলে দাবি তার পরিবারের একাংশের। তার জেরেই আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। এক্ষেত্রে জেলে কেন ওই বন্দিকে কাউন্সেলিং করানো হল না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মৃতের পরিজনদের একাংশ।