• সামনেই নিয়োগ পরীক্ষা, বিএলও পদে যোগ দিতে নারাজ শিলিগুড়ির শিক্ষিকা
    বর্তমান | ৩০ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: সামনেই নিয়োগ পরীক্ষা। তাই বিএলও’র দায়িত্ব পালন করতে পারব না। মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে নির্বাচন দপ্তরে হাজির হয়ে এমন আবদেন করেন এক শিক্ষিকা। এদিকে, বিএলও নিয়োগের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন কমিশনের কড়া সমালোচনা করেছে। আর সিপিএমের শিক্ষক সংগঠন বিএলও পদে শিক্ষকদের না নিয়োগ করার দাবি তুলেছে। 

    জেলা নির্বাচন দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, কমিশনের নির্দেশমতো গ্রুপ ‘সি’ কিংবা তার উপরের পদমর্যাদার সরকারি কর্মচারীদের বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলও হিসেবে বাছা হচ্ছে। যে পার্টে বসবাস করেন, সেখানেই তাঁদের নিয়োগ করা হবে। কোনও পার্টে বসবাসকারীদের মধ্যে গ্রুপ ‘সি’ সরকারি কর্মচারী না থাকলে সেখানে সরকারি অফিসে কর্মরত কর্মীদের বিএলও হিসেবে নিয়োগ করা হবে। কমিশনের নির্দেশ অনুসারে সেই তালিকায় হাইস্কুলের শিক্ষকরা পড়ছেন। তাই তাঁদের কাছে বিএলও’র নিয়োগপত্র পাঠানো হচ্ছে। 

    শিলিগুড়ি সহ দার্জিলিং জেলায় বিধানসভা কেন্দ্রের সংখ্যা পাঁচটি। তাতে বুথের সংখ্যা ১৪৬৫টি। সচিত্র ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ নিয়ে প্রতি বুথে একজন  করে বিএলও নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারী সহ হাইস্কুলের শিক্ষকদের কাছে বিএলও পদে নিয়োগ করা হচ্ছে। এজন্য সকলের কাছে নোটিস পাঠানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে জলপাইগুড়িতে গিয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ৩৫ জন বিএলও। 

    এদিকে, কমিশনের নোটিস পেয়েই বিএলও’র পদ প্রত্যাখ্যান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শিক্ষকদের একাংশ। তাঁদের মধ্যে কারও কারও চাকরি ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত রয়েছে। এদিন ওই শিক্ষক, শিক্ষিকাদের মধ্যে একজন বিএলও’র ডিউটি না করার দাবি নিয়ে মহকুমা নির্বাচন দপ্তরের যোগাযোগ করেন। ওই শিক্ষিকা বলেন, কিছুদিন আগে হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি খুইয়েছিলাম। পরবর্তীতে কোর্টের নির্দেশে ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরি আছে। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বসব। এজন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। বিএলও’র ডিউটি করলে নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি মার খাবে। তাই ওই ডিউটিতে যোগ দিতে চাইছি না। 

    নির্বাচন দপ্তরের এক অফিসার অবশ্য বলেন, প্রতিদিনই এমন আবেদন মিলছে। কিন্তু ওই শিক্ষকরা এখনও চাকরি হারাননি। তাই কমিশনের নির্দেশ মতো তাঁদের বিএলও পদে নিয়োগ করা হচ্ছে। 

    এদিকে, বিএলও নিয়োগের ব্যাপারে কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল কংগ্রেস মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি। সমিতির দার্জিলিং জেলার সভাপতি (সমতল) সুপ্রকাশ রায় বলেন, বিগত বছরগুলিতে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মী দিয়ে বিএলও’র কাজকর্ম স্বাভাবিক পথেই চলছিল। এবার বিএলও নিয়োগ নিয়ে কমিশন ফতোয়া জারি করেছে। যার ফলে হাইস্কুলের শিক্ষকদের বিএলও পদে নিয়োগ করতে হচ্ছে জেলা প্রশাসনকে। 

    এবিটিএ’র দার্জিলিং জেলা সম্পাদক বিদ্যুৎ রাজগুরু বলেন, বিভিন্ন হাইস্কুলে শিক্ষকের অভাব রয়েছে। তাই পঠনপাঠন স্বাভাবিক রাখতে হলে শিক্ষকদের বিএলও পদে নিয়োগ করা চলবে না। এই দাবি কমিশনের কাছে জানানো হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)