নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: সীমান্ত এলাকার কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট বা সিএসপি মালিকদের টার্গেট করে গড়ে ওঠা আন্তঃরাজ্য সাইবার প্রতারণা চক্রের পর্দা ফাঁস করল কোচবিহার জেলা পুলিস। তুফানগঞ্জ ও সাহেবগঞ্জ থানার দু’টি মামলার তদন্তে নেমে পুলিস এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতরা হল শুভজিৎ বল্লভ ও রিয়া হালদার। তারা নদীয়া জেলার রানাঘাটের ধানতলার বাসিন্দা। সরকারি কর্মচারী সেজে তারা প্রতারণা করত। শিলিগুড়ি সাইবার থানা, জঙ্গিপুর, ধানতলা, কালনা, বসিরহাট, কৃষ্ণনগর থানায় শুভজিতের নামে মামলা রয়েছে। ধানতলা থানায় ধৃতের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্টও রয়েছে।
তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পারে, এরা বর্ডার আউট পোস্টের কাছাকাছি সিএসপি’র মালিকদের টার্গেট করত। বিএসএফের অফিসার, কোম্পানি কমান্ডার বা ইনস্পেক্টর সেজে অচেনা মোবাইল নম্বর থেকে শুভজিৎ সিএসপি মালিকদের ফোন করত। জানাত, কিছু টাকা পাঠালে নগদে বা কমিশনে ফেরত দেবে। টাকা পাঠিয়ে প্রচুর লোক প্রতিরিত হয়। ২০২৪ সালে পশ্চিমবঙ্গ সহ অন্যান্য রাজ্যে মোট ৮৭৭টি অভিযোগ দায়ের হয় এদের নামে। ২০২৫ সালে এখনও পর্যন্ত এনসিআরপিতে ৬৮টি অভিযোগ রয়েছে। যেগুলি পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ থেকে। কোচবিহার জেলাতেই ১৯টি প্রতারণার ঘটনা রয়েছে। ২০২৫ সালের মোট প্রতারণার অঙ্ক ৪৮ লক্ষ ১৫ হাজার ১০০ টাকা। তিনটি সিম এবং আইএমইআই নম্বর বিশ্লেষণ করে ৪৩টি অভিযোগের সঙ্গে সংযোগ পাওয়া গিয়েছে।
পুলিস জানিয়েছে, মামলাগুলির মধ্যে উত্তরপ্রদেশে ১৮৩, রাজস্থানে ১০৭, তেলেঙ্গানায় ৭৭, মহারাষ্ট্রে ৬০, দিল্লিতে ৫৫, বিহারে ৫৪, তামিলনাডুতে ৪৯, পশ্চিমবঙ্গে ৪৩ সহ অন্যান্য রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ২৫৮টি মামলা রয়েছে। সোমবার বিহারের দ্বারভাঙার হোটেল থেকে প্রতারক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে পুলিস।
কোচবিহারের পুলিস সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, শুভজিৎ বল্লভ নামে একজনকে দ্বারভাঙা থেকে গ্রেপ্তার করে আনা হয়েছে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড পোর্টালে ওই ব্যক্তির ফোন নম্বর দিয়ে দেখা যায় সংশ্লিষ্ট নম্বর ব্যবহার করে ২০২৪ সালে ৮৭৭টি ও ২০২৫ সালে ৬৮টি প্রতারণা করা হয়েছে। ধৃতের স্ত্রীও হোটেলে ছিল। তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র।