সংবাদদাতা, দিনহাটা: কলকাতার শিয়ালদহ স্টেশন থেকে উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসে পাঠানো হয়েছিল পনেরোটি বস্তা। লেখা ছিল ‘ওষুধ’। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ সেই বস্তাগুলি দিনহাটা স্টেশনে এসে পৌঁছয় এবং স্টেশনের পার্সেল ঘরে রাখা হয়। কিন্তু এর মধ্যেই গোপনে খবর যায় জিআরপি’র কাছে যে, ওই ওষুধের বস্তায় রয়েছে নিষিদ্ধ মাদক কাফ সিরাপ। এরপরই নিউ কোচবিহার জিআরপির তরফে শুরু হয় তৎপরতা।
নিউ কোচবিহার জিআরপি থানার ইনস্পেক্টর ইনচার্জ মন্টু বর্মনের নেতৃত্বে একটি টিম দ্রুত রওনা দেয় দিনহাটা স্টেশনের উদ্দেশে। রেল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় পার্সেল ঘর খুলে বস্তাগুলি পরীক্ষা করা হয়। প্রত্যেকটি বস্তার মধ্যে ছিল দু’টি করে বড় কার্টন। সেগুলি খুলতেই চমকে ওঠেন উপস্থিত রেল ও জিআরপি আধিকারিক, কর্মীরা। কারণ, যেখানে থাকার কথা ছিল সাধারণ ওষুধ, দেখা যায় সারি সারি বোতল। ১৫টি বস্তায় ভরা ছিল ৯ হাজার বোতল কাফ সিরাপ। যার বাজার মূল্য প্রায় ১৯ লক্ষ টাকা বলে জানান আধিকারিকরা।
পুলিসের প্রাথমিক অনুমান, এই কাফ সিরাপগুলি বাংলাদেশে পাচারের উদ্দেশেই কলকাতা থেকে পাঠানো হয়েছিল দিনহাটা স্টেশনে। দিনহাটা শহরে থাকা কোনও পাচারচক্রের হাতে সেগুলি পৌঁছত এবং সেখান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পাচার করা হতো। তবে তার আগেই জিআরপির তৎপরতায় এই গোটা চালান বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হয়েছে।
ঘটনার তদন্তে নেমেছে নিউ কোচবিহার জিআরপি। কে বা কারা এই পাচারের নেপথ্যে রয়েছে, কোথা থেকে এই চালান সংগ্রহ করা হয়েছিল এবং ঠিক কোন সিন্ডিকেটের কাছে তা পাঠানো হচ্ছিল- জানার চেষ্টা চলছে। জিআরপি আধিকারিকদের মতে, বড় কোনও আন্তঃ রাজ্য মাদকচক্র এই কাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে।
ঘটনার বিষয়ে নিউ কোচবিহার জিআরপির ইনস্পেক্টর ইনচার্জ মন্টু বর্মন বলেন, শিয়ালদহ স্টেশনে ওষুধের পার্সেল বুক করে প্রায় ৯ হাজার বোতল কাফ সিরাপ আনা হয়েছিল। দিনহাটা স্টেশনে নামানোর পর সেগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে পাচারের সঙ্গে কারা যুক্ত, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ঘটনায় দিনহাটা সহ আশেপাশ এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এত বড় মাদক চালান ধরা পড়ায় রেলপথ ব্যবহার করে মাদক পাচারের আশঙ্কা আরও জোরালো হয়েছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। পুলিস জানিয়েছে, তদন্তের স্বার্থে স্টেশনে লাগানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।