এক্সরে মেশিন খারাপ, তবুও সুপার স্পেশালিটি থেকে ‘রেফার’ সদরে
বর্তমান | ৩০ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: ডিজিটাল এক্সরে মেশিন খারাপ জেনেও সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে রোগীদের পাঠানো হচ্ছে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে গিয়ে রোগীরা দেখছেন, এক্সরে রুমের তালাবন্ধ। দরজায় নোটিসে লেখা, মেশিন খারাপ। এতে হয়রান হচ্ছে রোগী ও তাঁদের পরিজনরা।
জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের অধীন সদর হাসপাতালে এক্সরে রুমের সামনে দাঁড়িয়ে ময়নাগুড়ির বাসিন্দা সমাপ্তি শীল বলেন, কোমরে ব্যথার জন্য মেডিক্যালের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে আউটডোরে ডাক্তার দেখাই। সেখান থেকে এক্সরে লিখে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, সদর হাসপাতাল থেকে ওই এক্সরে হবে। কিন্তু এখানে এসে দেখছি, এক্সরে রুমের তালাবন্ধ। পাশে দাঁড়ানো জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের কাদোবাড়ির বাসিন্দা বছর পঁয়ষট্টির অপূর্ব পালের বক্তব্য, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে আমাকে বলা হয়েছে সদর হাসপাতালে আমার শিরদাঁড়ার এক্সরে হবে। ওই হাসপাতাল থেকে এই হাসপাতালের দূরত্ব তিন কিমিরও বেশি। টোটো ভাড়া নিল ৩০ টাকা। এখানে এসে শুনছি, এক্সরে মেশিন খারাপ। তাহলে কেন এভাবে হয়রান করা হল? ঘাড়ের ব্যথা নিয়ে জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের আউটডোরে ডাক্তার দেখান রংধামালির বাসিন্দা দীপ্তি রায়। তাঁকেও সদর হাসপাতাল থেকে এক্সরে করাতে বলা হয়েছে। কিন্তু টোটো ভাড়া করে এসেও পরিষেবা না পেয়ে ফিরে যেতে হওয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি।
এনিয়ে মেডিক্যালের সুপার ডাঃ কল্যাণ খাঁ বলেন, সদর হাসপাতালে পিপিপি মডেলে ডিজিটাল এক্সরে চলে। বেশ কিছুদিন ধরে সেখানে মেশিন খারাপ রয়েছে। এরপরও কেন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে রোগীদের এক্সরে করানোর জন্য সেখানে পাঠানো হচ্ছে, খোঁজ নিচ্ছি। তাঁর দাবি, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এক্সরে পরিষেবা চালু রয়েছে। আউটডোরের রোগীদেরও সেখানেই প্রয়োজনে এক্সরে করাতে হবে, এমনটাই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপরও কেন রোগীদের সদর হাসপাতালে পাঠানো হল, তা নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্তদের কাছে জানতে চাইব।
এদিকে, জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ডায়ালিসিস পরিষেবাও মুখ থুবড়ে পড়েছে। ডায়ালিসিসের পাঁচটি মেশিনের মধ্যে সচল দু’টি। ফলে কিডনির রোগীদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একজনের ডায়ালিসিস হতে গড়ে সময় লাগছে চারঘণ্টা। দু’টি মেশিনে পাঁচটি শিফ্ট করে দিনে সর্বোচ্চ দশজনের ডায়ালিসিস করানো সম্ভব হচ্ছে। ফলে ফিরে যেতে হচ্ছে অনেককে। সুপারের দাবি, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ডায়ালিসিস চালু রয়েছে। জরুরি রোগীদের সেখানে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।