কয়লা চুরির বিষয়টি জানা নেই, সাক্ষী দিতে এসে দাবি ইসিএল কর্তার
বর্তমান | ৩০ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: কয়লা পাচার মামলায় মঙ্গলবার সাক্ষী দিলেন কোল ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর পিএম প্রসাদ। সাক্ষী গ্রহণে বেশ কিছু বিস্ফোরক তথ্য সামনে এসেছে। অভিযুক্তের আইনজীবীদের জেরায় তিনি আদালতকে জানিয়েছেন, কোন সময় থেকে ইসিএলের কয়লা নিয়ে অবৈধ কারবার চলছে, সেটা তাঁর জানা নেই। এমনকী, এই কয়লা লুট নিয়ে সংস্থার কোনও অফিসার কিংবা কর্মী তাঁকে রিপোর্ট দেননি। তিনি যা তথ্য পেয়েছেন সবটাই সিবিআইয়ের দেওয়া নথি থেকে। তিনি এদিন সাক্ষ্যদানে এসে এটাও স্বীকার করে নিয়েছেন, সিবিআই তদন্ত করে বিপুল কয়লা চুরির অভিযোগ আনলেও তিনি পৃথকভাবে কোনও তদন্তের নির্দেশ দেননি।
কয়লা পাচার মামলায় সিবিআই প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার কয়লা চুরির অভিযোগ এনেছে। অভিযুক্তের আইনজীবী শেখর কুণ্ডুর প্রশ্ন ছিল, এই সময়ে কয়লা উৎপাদনের কোনও ঘাটতি ধরা পড়েনি? এত কয়লা চুরি যখন হয়েছে! জবাবে ইসিএলের শীর্ষকর্তা বলেন, তেমন কোওে রিপোর্ট নেই। পরের প্রশ্ন ছিল, যে সব এরিয়ায় কয়লা চুরির অভিযোগ রয়েছে, তাদের কয়লা উত্তোলনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি, এমন কোন অভিযোগ উঠেছিল? সেই প্রশ্নেও ‘না’ বলেছেন প্রসাদ। অভিযুক্ত পক্ষের আর এক আইনজীবী সোমনাথ চট্টোরাজ প্রশ্ন করেন, কয়লা চুরি নিয়ে সিবিআই যে নথি আপনাকে দিয়েছিল তার কোন বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করেছিলেন? তিনি বলেন, আলাদা করে তা করা হয়নি। তাঁদের নথির উপর ভিত্তি করেই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
কয়লা পাচার কাণ্ডে সিবিআই ইসিএলের একাধিক জেনারেল ম্যানেজারকে গ্রেপ্তার করেছিল। মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করার জন্য ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন করার আর্জি জানিয়েছিলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। গ্রেপ্তার হওয়া তৎকালীন কুনোস্তোড়িয়ার এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার অমিতকুমার ধর ও কাজোড়া এরিয়ার তৎকালীন জেনারেল ম্যানেজার নরেশচন্দ্র সাহার বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের অনুমোদন সিবিআইকে দিয়েছিলেন স্বয়ং কোল ইন্ডিয়ার সিএমডি পিএম প্রসাদ। সেই সুবাদেই এদিন তাঁদের আদালতে সাক্ষ্য দিতে হয়। একের পর এক প্রশ্নবাণে তাঁকে জেরবার করেন অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীরা। সওয়াল জবাব শেষ হওয়ার পর আসানসোল সিবিআই বিশেষ আদালতের বিচারক অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় ২৯ আগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।
এদিনও শুনানির দিন আদালতে হাজির হয়েছিলেন শিল্পাঞ্চলের খ্যাতনামা কয়লা কারবারিরা। মামলায় অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালা, জয়দেব মণ্ডল, গুরুপদ মাজি, নীরদবরণ মণ্ডল, নারায়ণ খাড়কারা হাজিরা দেন। যে দশটি কোম্পানি এই মামলায় অভিযুক্ত তাঁদের আধিকারিকরাও হাজিরা দিয়েছেন।