• ঝাড়গ্রামে নিষ্ক্রিয় তৃণমূলের যুব সংগঠন, সভাপতিকে হেনস্তার অভিযোগ, চাঞ্চল্য
    বর্তমান | ৩০ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: ঝাড়গ্ৰাম জেলা তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি। ছাব্বিশের ভোটকে সামনে রেখে জেলা নেতৃত্ব মাঠে নেমে পড়েছে। একুশের জুলাইয়ের সমাবেশে দলনেত্রী লড়াইয়ের অভিমুখও ঠিক করে দিয়েছেন। কিন্তু, ঠিক এই সময়েই শহর তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি বিক্রমাদিত্য মল্লদেব সংগঠনের একাংশের বিরুদ্ধে শারীরিকভাবে হেনস্তা, অসম্মান ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে তুলছেন। দলের অন্দরে যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।

    ঝাড়গ্ৰাম শহর জেলা রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র। সেই শহরেই তৃণমূল সাংগঠনিকভাবে দুর্বল। উনিশের লোকসভা ভোটে ওয়ার্ড ভিত্তিক ফলাফলে বিজেপির থেকে পিছিয়ে তৃণমূল। শহরের নেতৃত্বের একাংশ প্রকাশ্যে সেই ব্যর্থতার দায় স্বীকারও করে নিয়েছিল। ২০২২ সালের বিধানসভা ভোটের পর থেকে নেতৃত্বের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ও শহর যুব সংগঠনের নিষ্ক্রিয়তা বারবার সামনে এসেছে। একুশে জুলাই শহিদ সমাবেশ ঘিরে তৃণমূল নেতৃত্ব জেলাজুড়ে ব্যাপক প্রচার চালায়। সেখানে শহর যুব নেতৃত্বের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা শুরু হয়। 

    ঝাড়গ্রাম রাজ পরিবারের সদস্য বিক্রমাদিত্য মল্লদেবকে বাইশ সালে শহর যুব সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। যুব সংগঠনের বড় অংশ যা মেনে নিতে পারেননি। তার পর থেকে সংগঠনের অন্দরে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। কয়েকমাস আগেই বিক্রমাদিত্যবাবুকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করা হয়। তিনি ঝাড়গ্রাম থানায় অভিযোগও করেন। তাঁকে হেনস্তার ঘটনায় বৈঠকও করা হয়। যদিও সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি। উল্টে শহর যুব সংগঠনের অন্দরে ফাটল আরও বেড়েছে। সংগঠনের সমস্ত কাজকর্ম থমকে গিয়েছে।  

    বিশ্ব আদিবাসী দিবস উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঝাড়গ্রামে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্ব যা নিয়ে প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছেন। আর দলের যুব নেতা এই সময়ে মুখ খোলায় দলের অন্দরে হইচই পড়ে গিয়েছে। বিক্রমাদিত্যবাবু বলেন, ২০২০ সালে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করি। বাইশ সালে আমাকে শহর যুব সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। সংগঠনের একটি অংশ প্রথম থেকেই এর বিরোধিতা করে। আমাকে শারীরিকভাবে হেনস্তা, অসম্মান করা হচ্ছে। হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। যাঁদের নিয়ে কাজ করছি তাঁদের কাজ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই সংগঠনের কাজকর্ম বন্ধ। বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বকে বিশদে জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দলীয় নেতৃত্ব বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখুক। 

    ঝাড়গ্ৰাম জেলার এক যুব নেতা বলেন, শহরকে কেন্দ্র করে জেলার রাজনীতি আবর্তিত হয়। সেই জায়গায় শহর তৃণমূল যুব সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। সংগঠনের কর্মসূচির অভাবে শহরের যুব সমাজের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে পড়ছে। জেলা নেতৃত্বকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। শহর যুব সংগঠনের এক সদস্য বলেন, একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে ঘিরে দলের বিভিন্ন সংগঠন ঝাঁপিয়ে পড়ে কাজ করেছে। আর আমরা চুপচাপ বসেছিলাম। জেলা নেতৃত্বেও বিষয়টি জানে। ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি প্রসূন ষড়ঙ্গি বলেন, জেলা নেতৃত্ব বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। দলীয় স্তরে পর্যালোচনার পর পদক্ষেপ করা হবে।  বিক্রমাদিত্য মল্লদেব।
  • Link to this news (বর্তমান)