মুর্শিদাবাদ স্টেশন লাগোয়া হোটেলে মধুচক্র, মালিক ও তিন খদ্দের ধৃত
বর্তমান | ৩০ জুলাই ২০২৫
সংবাদদাতা, লালবাগ: সোমবার রাতে মুর্শিদাবাদ জংশন সংলগ্ন একটি হোটেলে অভিযান চালিয়ে এক মহিলাকে উদ্ধার করল পুলিস। গ্রেপ্তার করা হয়েছে হোটেল মালিক ও তিনজন খদ্দেরকে। মঙ্গলবার ধৃতদের লালবাগ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। মুর্শিদাবাদ থানার আইসি রাজা সরকার বলেন, সোর্স মারফত খবর ছিল মুর্শিদাবাদ জংশন লাগোয়া ওই হোটেলে মহিলাদের আটকে রেখে জোর করে দেহ ব্যবসা করানো হচ্ছে। খবর মোতাবেক রাতে ওই হোটেলে অভিযান চালিয়ে একজন মহিলাকে উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি হোটেল মালিক ও তিনজন খদ্দেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
কয়েক বছরের মধ্যে মুর্শিদাবাদ শহরে ছাতার মতো হোটেল ও লজ গজিয়ে উঠেছে। ঐতিহাসিক এই শহরে পর্যটকের সংখ্যা বাড়তে থাকায় বহু অবৈধ হোটেল গজিয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। অনেক হোটেলেই নিয়মিত মধুচক্রের আসর বসে। দেদার টাকা রোজগারের নেশায় মত্ত হয়েছে কিছু হোটেল ব্যবসায়ী। এরসঙ্গে অনেক দালালও এই কাজে যুক্ত। মূলত তারাই হোটেলগুলিতে মহিলাদের নিয়ে আসে। এতে এলাকার পরিবেশ যেমন নষ্ট হচ্ছে তেমনি বাইরে থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা পর্যটকরা বিড়ম্বনায় পড়ছেন। হোটেলগুলি এই অবৈধ কার্যকলাপের জেরে পর্যটনের সঙ্গে যুক্তরাও ব্যাপক ক্ষুব্ধ। এ ব্যাপারে মুর্শিদাবাদ হেরিটেজ অ্যান্ড কালচার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, কিছু অসাধু হোটেল ব্যবসায়ীর জন্য পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে সকল ব্যবসায়ী ক্ষতির মুখে পড়ছেন। নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। সেই সঙ্গে নবাবের শহর সম্পর্কে নোংরা ধারণা নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন দেশ-বিদেশের পর্যটকরা। সম্প্রতি এই খবরে নড়েচড়ে বসেছে জেলা পুলিস প্রশাসন। গত দু’মাসে পুলিস মোট ১৫টি হোটেলে অভিযান চালিয়ে দু'জন মালিক, ম্যানেজার সহ মোট ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। উদ্ধার করা হয়েছে ২৩ জন মহিলাকে। পুলিস নির্দিষ্ট ধারায় ছ’টি হোটেলের বিরুদ্ধে এফআইআর করে মামলা শুরু করেছে। মধুচক্র চালানোর অভিযোগে জুন মাসে শহরের দু’টি হোটেলে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। ১২টি হোটেল মালিককে মহকুমা শাসকের দপ্তরে তাঁদের বৈধ কাগজপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে।
এই বিষয়ে মুর্শিদাবাদ হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক স্বপন দাস বলেন, ঐতিহাসিক এই শহরকে কলুষিত করছে কিছু অসাধু হোটেল ব্যবসায়ী। পুলিসের এই পদক্ষেপে আমাদের পূর্ণ সমর্থন আছে। আমরা চাই, পর্যটনের শহরে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসুক। -নিজস্ব চিত্র