রানিনগরে দিদার বাড়িতেই ‘সিঁদ’ কাটল নাতি ও নাতবউ, উদ্ধার ১৪ ভরি সোনা
বর্তমান | ৩০ জুলাই ২০২৫
সংবাদদাতা, ডোমকল: মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন দিদা। সেই সুযোগে বাড়িতে ঢুকে বাক্স ভেঙে সোনার গয়না নিয়ে চম্পট দেয় নাতি ও নাতবউ। দিদার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালাতেই উদ্ধারও হয় চুরি যাওয়া প্রায় ১৪ ভরি সোনার গয়না। ঘটনাটি রানিনগরের দৌলতাবাদের। সোমবার সন্ধ্যায় তাদের বাড়িতে রাখা স্কুটির টুলবক্স থেকে ওইসব গয়না উদ্ধার করেছে রানিনগর থানার পুলিস।
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, রানিনগরের বংশীবদনপুরে বাড়ি আরতী গুপ্ত নামে এক বৃদ্ধার। তাঁর ছেলে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কর্মরত। আর মেয়ে সাথী কর্মকারের বিয়ে হয়েছে দৌলতাবাদে। সপ্তাহ দেড়েক আগে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন আরতীদেবী। বাড়ি তালাবন্দি ছিল। সেই সুযোগেই ২৫ জুলাই রাতে দিদার বাড়িতে ঢোকে সাথী কর্মকারের ছেলে রাহুল কর্মকার ও পুত্রবধূ মিঠু কর্মকার। রাতের অন্ধকারে তারা দিদার গয়না বাক্স ভেঙে হাতিয়ে নেয় প্রায় ১৫ ভরি সোনা। পাশাপাশি বাড়ির দলিল বের ছিঁড়ে ফেলে দিয়ে চম্পট দেয় দু’জনে।
পরের দিন সকালে প্রতিবেশীর মাধ্যমে খবর পান আরতীদেবী। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি মেয়ে সাথী কর্মকারকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসেন। এসে দেখেন ঘরের ভিতর সব লণ্ডভণ্ড অবস্থা। গোটা বিষয়টি জানান রানিনগর থানায়। পুলিসও দ্রুত চলে আসে। আশপাশে দলিলের কাগজ ছেঁড়া অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে প্রাথমিকভাবে পুলিসের মনে হয়, বাড়ির পরিচিত কেউ হয়তো এই কাজ করেছে। সেই সময় সাথীদেবীও সন্দেহ প্রকাশ করেন, মায়ের বাড়িত ‘সিঁদ’ কাটার পেছনে তাঁর ছেলে ও পুত্রবধূর হাত থাকতে পারে। পরে আরতীদেবী নাতি ও নাতবউয়ের নামে রানিনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এরপরই তদন্তে নামে পুলিস। খবর পেয়ে রাতেই ওই দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে রানিনগর থানার পুলিস। আদালতে তোলা হলে রাহুল কর্মকারকে ৫ দিনের ও মিঠু কর্মকারকে ৩ দিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতরা চুরির বিষয়টি স্বীকার করে নেয়। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দৌলতাবাদে তাদের বাড়িতে থাকা স্কুটির টুলবক্স থেকে উদ্ধার হয় চুরি যাওয়া ১৪ ভরি সোনার গয়না।
পুলিস সূত্রের খবর, ধৃতরা চুরির পর ওই সোনা বিক্রির চেষ্টা করেছিল। সেই কারণে সোনার অলঙ্কারের একটা অংশ তারা গলিয়েও ফেলেছিল। তবে, সেই সময় বিক্রি না হওয়ায় সন্দেহ এড়াতে সোনার বেশ কিছু অংশ স্কুটির টুলবক্সে লুকিয়ে রেখেছিল। শেষপর্যন্ত সেগুলি উদ্ধার করতে সক্ষম হয় রানিনগর থানার পুলিস। -নিজস্ব চিত্র