সংবাদদাতা, করিমপুর: শ্রেণিকক্ষের মধ্যে সামনের বেঞ্চ বা পিছনের বেঞ্চে বসে ক্লাস করার দিন শেষ। বদলে মাঝে টেবিল চেয়ারে থাকা শিক্ষককে তিন দিকে ঘিরে বেঞ্চে বসে ক্লাস চলছে গোপালপাড়া নিউ সেট আপ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তাতে পিছনের বেঞ্চে বসা অমনোযোগী ছাত্রদেরও পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে বাধ্য হবে বলে ধারণা স্কুল কর্তৃপক্ষের।
ওই স্কুলে সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণত যেকোনও ক্লাসে মনোযোগী ছাত্রছাত্রীরা সামনের বেঞ্চে বসে। আর যারা তুলনায় ফাঁকিবাজ বা পড়াশোনায় অমনোযোগী তাদের পিছনের বেঞ্চে বসার প্রবণতা বেশি থাকে। অনেকে পিছনে বসে গল্প করে। তাতে বাকিদের পড়াশোনার ক্ষতি হয়। সেই কারণে এবার ছাত্রছাত্রীদের ক্লাসে বসার ধরন বদলে ফেলা হয়েছে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক সন্তু প্রামাণিক বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে এই পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। সকল ছাত্রছাত্রীকে সামনে বসিয়ে তাদের মধ্যে ভালো বা খারাপ পড়ুয়ার বৈষম্য দূর করা যাবে। পাশাপাশি পড়াশোনায় তাদের আগ্রহ বাড়ানো যাবে। পিছনে বসার জন্য শিক্ষকও তাদের দিকে ঠিকমতো নজর রাখতে পারতেন না। আমাদের স্কুলে সপ্তাহ দু’য়েক আগে এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এখন ক্লাসরুমের মাঝে শিক্ষক বসেন। আর তাঁকে ইউ আকারে তিনদিক ঘিরে বেঞ্চে বসে পড়ুয়ারা। ফলে এখন কোনও শ্রেণিকক্ষে ব্যাক বেঞ্চ বা সামনের বেঞ্চ বলে কিছু নেই। এখন সবাই সামনের সারিতেই বসছে।
অভিভাবকদের একাংশ বলেন, স্কুলের এই উদ্যোগ খুবই ভালো। স্কুলে ছেলেমেয়েরা পিছনে বসার ফলে শিক্ষকদের লুকিয়ে বা তাঁদের চোখকে ফাঁকি দিত। পড়াশোনাতেও পিছিয়ে পড়ত। এখন সবাই সামনে বসায় শিক্ষকের কথা শুনতে পারবে। আর শিক্ষকও সব ছাত্রছাত্রীর উপর নজর রাখতে পারবেন।
করিমপুর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সোমদেব মজুমদার জানান, শিক্ষক ও ছাত্রদের সম্পর্ক ভালো হলে পড়ুয়াদের ভয় কাটবে। পড়াশোনার প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়বে। এই পদ্ধতিতে ব্যাপক সাড়া মিলছে। সাধারণত, প্রথম বেঞ্চে বসা নিয়ে মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলে। পড়াশোনায় দুর্বলরা প্রথম বেঞ্চে বসতে চায় না। পিছনের বেঞ্চে বসা ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকদের দূরত্ব তৈরি হয়। নতুন এই পদ্ধতিতে ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছে।
নদীয়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান দেবাশিস বিশ্বাস জানান, এই পদ্ধতি জেলার বেশকিছু স্কুলে চালু হয়েছে। এখন সকল পড়ুয়ার সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র